জন্মাষ্টমী আজ

জন্মাষ্টমী আজ

বাংলাভাষী ডেস্ক

শুভ জন্মাষ্টমী আজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র জন্মতিথি। তার ভক্তরা বিশ্বাস করেন, দ্বাপর যুগের সন্ধিক্ষণে পৃথিবী থেকে দুরাচারী দুষ্টদের দমন আর সজ্জনদের রক্ষার জন্যই মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই দিনে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে এসেছিলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথিকে ভক্তরা শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদযাপন করে থাকেন।

পাশবিক শক্তি যখন সত্য, সুন্দর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই অসুন্দরকে দমন করে জাতিকে রক্ষা এবং শুভ শক্তিকে প্রতিষ্ঠায় আবির্ভাব ঘটে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের।

দিবসটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠান।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। যেখানেই অন্যায় অবিচার এ ধরাধামকে গ্রাস করেছে সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছেন আপন মহিমায়।’

বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ অভিহিত করে রাষ্ট্রপ্রধান আরও বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের মহান ঐতিহ্য। জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনে সবাইকে সম্মিলিতভাবে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পারিক সৌহার্দ অটুট রাখতে হবে।’

শ্রীকৃষ্ণের দর্শনকে ধারণ করে পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হিন্দু ধর্মের সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে দেশের সব নাগরিকের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘শ্রীকৃষ্ণের একমাত্র লক্ষ্য ছিল মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা। তিনি আজীবন শান্তি, মানবপ্রেম ও ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। শ্রীকৃষ্ণ তার জীবনাচরণ এবং কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের আরাধনা করেছেন।’

এদেশে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’

করোনাভাইরাস মহামারিকালে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে সবাইকে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

করোনা মহামারির কারণে এবারও সীমিত পরিসরে হবে এই আয়োজন। থাকবে না কোনো শোভাযাত্রা।

রোববার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সব ধরনের শোভাযাত্রা, র‌্যালি, মিছিল বন্ধ থাকবে। তবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করা যাবে।

আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা ও কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির প্রাঙ্গণে পূজাসহ সব আচারবিধি পালন করা হবে।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সোমবার সকালে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় শুরু হবে গীতাযজ্ঞ। গীতাপাঠ চলবে দুপুর পর্যন্ত। রাত ৮টার পর শুরু হবে কৃষ্ণ পূজা।