নির্মল কুমার প্রধান এর গুচ্ছ কবিতা

কবিতা --১
// কুয়াশা //
কুয়াশা ভেজা শীতের প্রহর
ঢেকেছে সারা প্রকৃতিকে ---
তার ইচ্ছে -তরীটা ভোরের ঘাটে থামতেই
সোনালি রোদ্দুরে উধাও কোথায় সে ,
মাঠ জুড়ে তার শিশ্ রে পদচিহ্ন
কিছু মুক্তো ঝরা অব্যক্ত কথা
আর মৃদুমন্দ হিমেল হাওয়া ঝরা নিঃশ্বাস।
কুয়াশার চাদর জড়ানো প্রকৃতিকে
ভালোবেসে আমি বলেছি মরমের কথা ---
কু-আশার কুয়াশায় সম্পৃক্ত আমি -বড় বিপন্ন !
জানি না , কু-আশার জাল সরাতে
তার ফাঁদ-ফাঁস থেকে রেহাই পেতে উপায় কি ?
আমি -টাই আমার চোরাবালি , মরু আলেয়া ,
আমার হৃদয়-মনে জড়িয়ে আছে
কু-আশার ঘন আস্তরণ -- দুর্দৈব মায়া !
কবিতা --২
// বৈকালিক //
পটদীপ-এর কোমল সুরের আবহ
দোল খাচ্ছিল আকাশে বাতাসে , মাটিতে
দিনের অনুবাত ঢালে নেমে আসা সূর্যটা
ক্লান্ত -বিবর্ণ মুখ দেখছিল
অঙ্গার লাল গঙ্গার ভাঁটি -আয়নায় ,
ঝাঁউয়ের সারি নত - নম্র , বিশ্রাম চায় ।
পথ হাঁটা পথিকের মন ছিল উচাটন ---
না ইচ্ছের সাম্পানটা সবে ভাসছে ,
রোদ পড়ে আসা সময়টা
ধরছিল বিকেল ফুরানোর একক ভাটিয়ালি ,
আর ওই যে --কাকভোরে বেরোনো পাখিটা
দলছুট হ'য়ে যেন পথ হারায় কোথাও ,
আবার অনেকে খোঁজ পায়
ফেলে আসা নীড়ের , ঠিক ঠিকানার ।
রঙের কাঁটাটা তখন পুরবীর দিকে
মনটা অনাবৃত ভাবনায় এলোমেলো গান ধরে ,
দিগন্ত জানান দেয় আবছায়া হাসিতে --
এবার যে ফিরতে হবে --- ওদিকেই ,
যেখানে বিকেলটাও গিয়ে থামবে ।
পরিচিতিঃ
কবি–নির্মল কুমার প্রধান । জন্ম– ১৯/০৭/১৯৬১। ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার পাথরপ্রতিমা থানার বরদাপুর গ্রামে জন্ম। পিতা — ঁ সুধীরচন্দ্র এবং মাতা– ঁরসনাবালা। শিক্ষকতার সাথে সাথে লেখায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। বিভিন্ন পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।