অধরা এ মনটা (নিবন্ধ )
মোঃ হাবিবুর রহমান
মানুষের মন যেন এক বিচিত্র জিনিস! একটু দূরে গেলে বা চোখের আড়াল হ'লেই বুঝি তারা একে অপরকে সত্বর ভুলে যায়। এটা মায়ের পেটের আপন ভাইবোনদের ক্ষেত্রেও কোন কোন সময় কমবেশী একইভাবে প্রযোজ্য।
তবে মানুষে মানুষে যে কত পার্থক্য, কত ভেদ সেটা মানুষের মন নিয়ে যারা লেখাপড়া বা গবেষণা করেন তারা হয়ত আরও ভাল ব'লতে পারবেন।
অতি আবেগপ্রবণ মানুষেরা হঠাৎ মহান হ'য়ে যাবার ফলে তাদের দ্রুততার সাথে দেউলিয়া হবার সম্ভাবনা থাকে প্রায় শতভাগ। কারণ, তারা হিসেব ক'রে কোন সময় সিদ্ধান্ত নেয় না কিংবা নিতে পারেও না।
তবে বিশ্বায়ন ও বিজ্ঞায়নের যুগে মানুষের জীবন কৃত্তিমতা ও বৈষয়িকতায় যেন একদম ভ'রে গেছে এবং সেইসাথে লোক দেখানোর বিষয়টি সমাজে যেন ষোল আনাই হরহামেশায় চ'লছে।
অন্যদিকে, সমাজের মানুষগুলো আজ বেশী ব্যক্তি কেন্দ্রিক হওয়াতে কেউ কারো জন্যে আগের মত আর ভাবেনা। সবাই যেন এখন "নিজে বাঁচলে বাপের নাম" এই থিওরীতে চ'লে গেছে।
তবে এর ব্যতিক্রমও আছে; নাহলে জগৎ সংসার হয়তবা টিকতো না। বিশ্বকবি লেখার ধ্যাণে গভীরভাবে মগ্ন থেকে বোধ করি চরিত্রাঙ্ককনের সুবিধার্থে নিজের চরিত্রের বিচারে হয়তবা তিনি পোষ্ট মাষ্টারের চরিত্রটিই অঙ্কন ক'রেছেন।
১২ বছর একসাথে থাকার পরও পোষ্ট মাষ্টার রতনকে বিদায়কালে বুঝতে ব্যর্থ হ'য়ে শুধু বিস্মিত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থেকেছে কিন্তু আজ যুগটি পাল্টিয়েছে, নতুনভাবে ভাবার সময় এসেছে; তাই সকলকে এখন এসব বিষয়ে চোখ খুলে ভাবতে হবে।
যত পরিবর্তনই আসুক সমাজে, যত প্রযুক্তিই আসুক মানুষের মনের ভিতর ঢুকে এ প্রযুক্তি কোন দিনই হয়তবা তার মন মানসিকতার সম্পূর্ণটা আবিস্কার ক'রতে পারবে না এটা অন্ততঃ নিশ্চিত করে বলাই যায়।
কেউ কোনদিন কাউকে না দেখেও শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমেই অনেক সময় অতি আপনজনের চেয়েও আপনজন হ'য়ে যেতে পারে।
শুনা যায়, চল্লিশটি বছর একটানা ঘর সংসার করার পরও স্বামী স্ত্রীকে কিংবা স্ত্রী স্বামীর মনের খবর জানতে পারে না।
তাই মানুষের মনের গভীরে আসলে কি লুকিয়ে থাকে তা অজানা আর তা বোধ করি সব সময় অধরাই র'য়ে যায়।