"আচরণিক পরিবর্তনে মনুষ্যত্বের বিকাশ মোটিভেশনাল নিবন্ধ

"আচরণিক পরিবর্তনে মনুষ্যত্বের বিকাশ   মোটিভেশনাল নিবন্ধ

  ---পারভীন আকতার

একটি সুস্থ শিশু সৃষ্টির পরপরই কাঁদে।তার পৃথিবীতে আসার বার্তা জানান দেয়।এই হলো মানুষের প্রকৃতিগত প্রথম আচরণ।যাতে মানুষ বুঝতে সক্ষম হয় একটি সুস্থ সবল শিশু তারা বিধাতার কৃপায় উপহার পেয়েছে।ধীরে ধীরে সে শিশু চলতে শেখে,কথা বলতে বলতে একসময় পুরো মাতৃভাষা নিজের আয়ত্ত্বে নিয়ে আসে।কথা,চলার সাথে সাথে শিশুর আচরণিক পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়।সে খেলতে গিয়ে ব্যথা পেলে কাঁদে,কেউ হাসালে হাসে।এভাবেই একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে সামগ্রিক আচরণের গোড়াপত্তন হয়।

এ পি জে আবুল কালাম বলেছেন,
"সূর্যের মত উজ্জ্বল হতে গেলে
প্রথমে সূর্যের মত জ্বলতে হবে।"এই কথাটি নিরেট সত্য।শিশুরা খুবই অনুকরণ প্রিয়।যে যেমন পরিবেশে থাকে ;তার ঐ পরিবেশে সহনশীল হয়ে আচরণিক পরিবর্তন সাধিত হয়।আবার চলমান জীবনে বিভিন্ন কার্যক্রম,ভিন্নভিন্ন মানুষের সাথে মিশে,লেখাপড়ার ক্রমবর্ধমান ধাপে ধাপে মানুষের আমূল আচরণিক পরিবর্তন হয়।এক সময় যে শিশু কথ্য ভাষা ছাড়া কথা বলতে পারত না ;স্কুলে পড়ে সে ভাল করে চলিত ভাষা কথা বলে। ইংরেজি, আরবী,সংস্কৃতি ইত্যাদি ভাষা রপ্ত করে।বইয়ের পড়ালেখা, জ্ঞান মানুষের ভিতরকার সংবেদনশীল স্নায়ুকে স্পর্শ করে। ব্রেনের বিভিন্ন অংশ তা গ্রহণ-বর্জন করে একেক মানুষকে একেক আচরণিক বিকাশ,মনুষ্যত্ববোধের  অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।

মানুষের শুদ্ধতায় আচরণিক পরিবর্তন ঘটাতে মানুষের মৌখিক আচরণ,চালচলন অনেকটাই নির্ভরশীল।মনে করুণ আপনার চাকরীস্থলে আপনার কলিগরা নানা ধরণের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন।কেউ আইসিটিতে দক্ষ,কেউ বাংলা,ইংরেজী আবার কেউ বা এডমিনিস্ট্রেশন খুবই উচ্চমান দক্ষতার অধিকারী।উনাদের সাথে আন্তরিকভাবে মিশে আপনি এসবের কম-বেশি  প্রায়ই সব গুণাবলী অর্জন করতে পারেন আজকালের মধ্যেই।এতে আপনার কর্মময় জীবন হবে আরো গতিশীল,প্রতিশ্রুতিশীল,প্রগতির স্বত্ত্বায় স্বাধীন।আপনি কোথাও গিয়ে আর ঠেকবেন না।আপনার আচরণিক পরিবর্তন ধীরে ধীরে মনুষ্যত্বের মানবিক দিকটাও দৃঢ় করে তুলবে।সফলতার চাবিকাঠি হলো আত্মবিশ্বাসের সাথে পরিশ্রম করে মন থেকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া।

আমরা যেভাবে ভাল আচরণে জ্ঞানের আলোয় নিজেদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়তে পারি ঠিক তেমনি এর খারাপ দিকটা চর্চায় আমাদের আচরণের ভিতর চলে আসে নৈরাজ্য সৃষ্টি, ক্ষমতার লিপ্সা, ঠকানোর মনোভাব,দূর্নীতি করা, ঘুষ দেয়া নেয়া,স্বজনপ্রীতি,অহেতুক অন্যের ক্ষতি সাধন করার পঞ্চমুখী পন্থা।এবার মানুষ হিসেবে আমাদের হাতে সব অপশন খোলা।শরৎচন্দ্র বলেছেন,“সাদা আলো যেমন বাঁকা কাঁচের মধ্যে রঙিন হয়ে ওঠে, ন্যায়ও তেমনি অন্যায়, অধর্ম, পাপ, তাপের বাঁকা পথ দিয়ে দয়া, মায়া, ক্ষমায় বিচিত্র হয়ে দেখা যায়।”
জীবনের কোনদিকে আমরা ধাবিত হব তা কিন্তু আমাদের ধর্মীয় বই-পুস্তক, পবিত্র কোরআন -হাদীস,বেধ, বাইবেল, ত্রিপিটক,পত্র পত্রিকা,মনিষীদের জীবনাচরণ, নবী রাসূল(সাঃ)জীবন কাহিনীতে সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে লিখিত দলিল পেশ করা হয়েছে।আর এই সব জ্ঞানের গভীরে বিচরণ করলে আমরা কখনোই স্রষ্টার সান্নিধ্য থেকে বিচ্ছুত হব না।কখনোই খারাপ পথে মন প্রলুব্ধ হবে না। আচরণের সুপরিবর্তন মনুষ্যত্ব বিকাশে উপরন্তু সম্ভাবনার আশা জাগাবে।এতে পৃথিবীতে ও নিজ জীবনে প্রশান্তি বিরাজ করবে অহর্নিশ।জীবন হবে সুন্দর ও নির্মল আনন্দের।একটি বিখ্যাত উক্তি আছে,
নিজেকে নিজেই টেনে তুলতে হবে..
কেউ আসবে না ভরসা হতে…
যদিও কেউ আসে,
তবে হয় তোমাকে ভেঙে দেবে,
না হয় দুর্বল করে দেবে…
তোমার পরে যাওয়া
মানে হেরে যাওয়া নয়,
তুমি মানুষ,কোনো দেবতা নও..
পরে যাও, ওঠো, দৌড়াও,
নিজেকে গড়ে তোলো…