আলীয়া মাঠে আজও রাত কাটাবেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

আলীয়া মাঠে আজও রাত কাটাবেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

গণ-সমাবেশের একদিন আগেই লোকে লোকারণ্য সিলেট আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ। বুধবার রাতে মাদ্রাসা মাঠে কয়েকটি অস্থায়ী ক্যাম্পে তৈরি করা হলেও শুক্রবার পুরো মাঠের অবস্থা ভিন্নরকম। তিল ধারণের ঠাঁই নেই কোথাও। ক্যাম্পের ভিতর-বাহির লোকে লোকারণ্য। তাছাড়া, প্রবেশ মুখ দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর প্রবেশ করছে খণ্ড খণ্ড মিছিল। মোট কথা শনিবার (১৯ নভেম্বর) গণসমাবেশের আগেই লোকে লোকারণ্য সিলেট সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ। সূর্যোদয়ের প্রতিক্ষায় মাঠেই রাত কাটাবেন নেতাকর্মীরা। গান-বাজনার ব্যবস্থাও রয়েছে মাঠে।

সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণ-সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ সাজিয়েছেন মেলার আদলে নিজেদের ক্যাম্প। কেউবা ক্যাম্পের ভিতর থেকে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন, কেউবা মাঠের মধ্য খানে অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিচ্ছেন। আবার অন্য একটি ক্যাম্পে আয়োজন হচ্ছে সঙ্গীতানুষ্ঠান। সব মিলিয়ে পুরো মাঠজুড়ে চলছে উৎসবের আমেজ।

নেতাকর্মীরা বলছেন, গণসমাবেশে সফল করতে নেতাকর্মীরা ৫ দিন আগ থেকেই অবস্থান করছেন সিলেটে। তবে বুধবার থেকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ নিজেদের ক্যাম্প তৈরি করে অবস্থান করছেন মাঠেই। রাতে এই সব ক্যাম্পগুলোতেই রাত যাপন করবেন তাঁরা।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) এই মাঠেই রান্না শেষে খাওয়া-দাওয়ার কাজ সেরেছেন নেতাকর্মীরা। জুম্মার নামাজ পরবর্তী মাঠে বেড়ে যায় লোক সমাগম। দলে দলে আসতে থাকে মিছিল। শ্লোগানে-শ্লোগানে কম্পিত হয়ে উঠে নগরী। খণ্ড খণ্ড মিছিলে মনে হয় সিলেট যেন মিছিলের নগরী। সবার লক্ষ্যস্থল একটাই। মিছিল সমেত নগরীর আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ। যেখানে রাত পোহালেই জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আহবানে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ বিভাগীয় গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশের জন্য নির্মিত বিশাল মঞ্চের কাজও ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।

নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বুধবার (১৬ নভেম্বর) রাত থেকেই মাঠে অবস্থান করছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের নেতাকর্মীরা। মাঠের মধ্যে থাকা স্টলের আদলে সাদা কাপড় দিয়ে মোড়ানো হয়েছে এক একটি ক্যাম্প। যেখানে নেতাকর্মীরা রাত-যাপন,খাওয়া-দাওয়াসহ সবকিছুই করতে পারছেন মাঠে থেকেই। হবিগঞ্জ থেকে আসা যুবদল কর্মী মনোয়ার বলেন, 'প্রায় ৫০ টি মোটর সাইকেল যোগে আমরা বিকালে মাঠে এসেছি এবং সমাবেশ শেষ করেই ঘরে ফিরবো। রাত কাটাবো মাঠের মধ্যেই'।

সুনামগঞ্জ থেকে আসা ছাত্রদল কর্মী সোবহান বলেন, পরিকল্পিত ধর্মঘটের কারণে সুনামগঞ্জ শহর পুরো অচল। তবুও শতাধিক মোটর সাইকেল নিয়ে সমাবেশের উদ্দেশ্যে সিলেটে এসেছেন নেতাকর্মীরা। মাঠের জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানার সাঁটানো ক্যাম্পে কথা হয় সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহবায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল আহাদ খান জামালের সাথে।

তিনি জানান, গণ সমাবেশ সফলের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও দফায় দফায় মাঠ পরিদর্শন করছেন। প্রচার-প্রচারণাও চলছে সমানতালে। মোট কথা এই গণসমাবেশ জালিম সরকারের ভিত নাড়িয়ে দিবে বলে আমাদের বিশ্বাস। অবস্থা বেগতিক দেখে সরকার বিভাগজুড়ে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। কিন্তু পরিকল্পিত এই ধর্মঘট গণ সমাবেশ সফলে বাঁধা হয়ে দাড়াবে না। কারণ, ইতোমধ্যে গোটা বিভাগে ৩০ হাজারের বেশি মোটরসাইকেল প্রস্তুত রয়েছে।

বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভাগীয় সমাবেশে আলিয়া মাদরাসা মাঠ ছাড়াও আশপাশের রাস্তায় মানুষজনের ব্যাপক সমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি। এ কারণেই বিভাগের জেলা ও উপজেলাগুলোতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা নিয়মিত গণসংযোগ, পথসভা, প্রচারপত্র বিতরণ, প্রচারমিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, কিছু কিছু জায়গায় পুলিশ প্রচারমিছিল ও প্রচারপত্র বিতরণে বাধা দিচ্ছে। তবে কোনো বাধা-বিপত্তি গণসমাবেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে পারবে না। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সমাবেশ সফলে কাজ করছেন। নগরজুড়ে ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন সাঁটানো এ প্রস্তুতিরই অংশ।

প্রসঙ্গত- বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদ বিলুপ্ত ও সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে বিভিন্ন বিভাগে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ করছে। সরকারি আলিয়া মাঠে অনুষ্ঠিতব্য গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমঙ্গীর।