কেমন আছিস

কেমন আছিস

রেজাউল করিম রোমেল 

বন্ধু, কেমন আছিস?কি খবর তোর?

অনেকদিন হোলো তোর কোনো খবর জানি না।

তুই তো ছিলি ছাত্র রাজনীতির একজন সক্রিয় সদস্য,

দলের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সংগ্রামী মানুষ। 

মিছিলে-মিছিলে স্লোগানে-স্লোগানে কত না

সংগ্রাম করেছিস ন্যায্য দাবি আদায়ের।

রাজপথ কাঁপানো বজ্রকন্ঠের সেই স্লোগান,

তোর স্লোগানে মুখোর হোতো রাজপথ। 

মনে পড়ে...

তোর আগুন ঝরানো বক্তৃতায় মুগ্ধ হোতো মানুষ।

কলেজের শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীরা বলতো-

শুভো একদিন বড় নেতা হবে, অবদান রাখবে 

দেশ ও জাতীর উন্নয়নে।

বন্ধু শুভো, কেমন আছিস তুই? 

কতদিন হল তোকে দেখি না!

সেদিনের সেই মিছিলে গোলাগুলির এক পর্যায়ে একটি বন্দুকের গুলি তোর পায়ে এসে লাগল।

তোকে হাসপাতালে নেওয়া হল।

ডাক্তার বললেন, 

-রোগীকে বাঁচাতে হলে তার পায়ের হাঁটু পযন্ত কেটে ফেলতে হবে। 

একটা সময় তোর একটি পায়ের হাঁটু পযন্ত কেটে ফেলা হল।

সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে

তুই তোর নিজ বাড়ি গ্রামে ফিরে গেলি।

তারপর থেকে তোর কোনো খবর জানি না।

বন্ধু তুই কেমন আছিস? কি খবর তোর?

তোর কি মনে পড়ে সুপ্রিয়া-র কথা!

যাকে তুই খুব ভালবাসতি। 

একদিন সুপ্রিয়া-কে বকুল ফুলের মালা দিয়ে বলেছিলি,

-তুমিই আমার একমাত্র ভালবাসা। আমার এই বকুল ফুলের মালাটি গ্রহন করো।

আর সুপ্রিয়া তোর কাছ থেকে মালাটি নিয়ে 

মাথা নিচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল।

আমরা ভেবে নিয়েছিলাম নীরবতায় সন্মতির লক্ষন।

কিছুদিন আগে সুপ্রিয়া-র বিয়ে হয়েছে।

শুনেছি স্বামী সংসার নিয়ে ভালই আছে মেয়েটি। 

আর আমি রোমানা-কে বিয়ে করেছি।

তুইতো জানতি আমি রোমানা-কে কতটা ভালোবাসি।

রোমানা প্রথম দিকে আমার প্রস্তাবে রাজি না হলেও পরবর্তী-তে রাজি হয়েছিল। 

বন্ধু শুভ, কেমন আছিস তুই? 

তোর কি মনে পড়ে সুপ্রিয়া-র কথা।

সেই কলেজ ক্যাম্পাসে বসে বন্ধুদের আড্ডা, রাজপথের মিছিলে অগ্নি ঝরা স্লোগান। 

হয়তো মনে পড়ে... হয়তো পড়ে না...