কৃষিপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী, গণভবনে গড়েছেন পূর্ণাঙ্গ খামার

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান অনস্বীকার্য। কৃষির উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশকে খাদ্যে করেছেন স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষির প্রতি তার যে ভালোবাসা, ভালোলাগা, প্রেম— তা ফুটে উঠেছে গণভবনে চাষাবাদের মাধ্যমে। তিনি গণভবনে গড়ে তুলেছেন পূর্ণাঙ্গ খামার।

গ্রামের গেরস্ত বাড়ির মতো পুরো গণভবনকে প্রায় একটি খামার বাড়িতে পরিণত করেছেন এদেশের মাটি ও মানুষের মাঝে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধু কন্যা। গণভবনে হাঁস, মুরগি, কবুতর ও গরু পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির ধান, শাক-সবজি, ফুল-ফল, মধু ও মাছ চাষ করছেন তিনি। তিল-সরিষা, পেঁয়াজসহ মসলা জাতীয় ফসলও ফলিয়েছেন। অবসর পেলেই এ সব তদারকিতে ব্যস্ত হয়ে যান কৃষিপ্রেমী শেখ হাসিনা।

করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে টালমাটাল বিশ্বে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিটি বক্তব্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সরকারি, বেসরকারি ও দলের সব অনুষ্ঠানে প্রতি ইঞ্চি জমিকে আবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নিজে গণভবন আঙিনার পতিত প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনেছেন এবং জনগণের প্রতি করা নিজের আহ্বানকে বাস্তবে রূপদান করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার বিষয়টি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের সবুজ বিপ্লবের ডাক থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সূত্র জানায়, গণভবন আঙিনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঁশফুল, পোলাও চাল, লাল চালসহ বিভিন্ন জাতের ধান; ফুলকপি, পাতাকপি, লালশাক, পালংশাক, ধনেপাতা, গ্রাম-বাংলার জনপ্রিয় বতুয়া শাক, ব্রকলি, টমেটো, লাউ, শিমসহ প্রায় সব ধরনের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গণভবনে তিল, সরিষা, সরিষা খেতে মৌচাক পালনের মাধ্যমে মধু আহরণ, হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, তেজপাতাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা; আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, বরই, ড্রাগন, স্ট্রবেরিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল; গোলাপ, সূর্যমুখী, গাঁদা, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলেরও চাষ করছেন সরকারপ্রধান। তিনি অবসর পেলেই এসব তদারকি করেন। এসবের ফসল ফলাতে ব্যবহার করা হয় গণভবনে গরুর খামারের গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সার।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, গণভবনের আঙিনায় আলাদা করে গরুর খামার, দেশি হাঁস-মুরগি, তিথির, চীনা হাঁস, রাজহাঁস, কবুতরের খামার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া পুকুরে চাষ করছেন রুই-কাতল, তেলাপিয়া, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এমনকি গণভবন পুকুরে মুক্তার চাষও করছেন বঙ্গবন্ধ কন্যা। অবসর সময়ে গণভবনের লেকে মাছও ধরেন তিনি।

সম্প্রতি গণভবনের মোট চাষের প্রায় অর্ধেক জমির পেঁয়াজ কাটা হয়েছে। এতে ফলন পাওয়া গেছে ৪৬ মণ। বাকি জমিতে আরও ৫০ মণের বেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাবে। গণভবনে ফলন পাওয়া ৪৬ মণ পেঁয়াজের দাম আসে আনুমানিক ৬৫-৭৩ হাজার টাকা। পাঁচজনের মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে মাসে পাঁচ কেজি হিসেবে পেঁয়াজের প্রয়োজন ধরলে গণভবনে উৎপাদিত প্রায় ১০০ মণ পেঁয়াজে সাত-আটশ পরিবারের এক মাসের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ হবে।

গণভবন সূত্র জানায়, উৎপাদিত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের জন্য সামান্য রেখে বাকি সব গণভবন কর্মচারী ও দরিদ্র-অসহায় মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেন।