*খেলাঘরের প্রাক্তন সংগঠক ও কর্মীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

*খেলাঘরের প্রাক্তন সংগঠক ও কর্মীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

মোস্তফা কামাল মিলন 

সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে বিবেকবানদের ঐক্য কামনা করে গত ২৪শে অক্টোবর রোববার লন্ডনের লাউটনে অবস্থিত ফরেষ্ট তন্দুরী নামক রেষ্টুরেন্টে বিলেতে অবস্থানরত খেলাঘর আসরের প্রাক্তন সংগঠক, কর্মী, অংশগ্রহনকারী ও বিভিন্নভাবে জড়িতদের এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। পুরো বিকেল জুড়ে চলা এ অনুষ্ঠানটি কয়েকটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল। যেমন: স্বাগত জানানো, শোক প্রস্তাব, নিন্দা প্রস্তাব, স্মৃতিচারণ, অতিথিগনের বক্তব্য, দুপুরের খাবার, শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, বড়দের আবৃত্তি ও গান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন। সবার অংশগ্রহনে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের গোড়াপত্তন ঘটে। সৈয়দ ইকবালের সঞ্চালনায় আগতদের স্বাগত জানান মৌলভীবাজার উত্তরণ খেলাঘরের অন্যতম সংগঠকদের একজন সাহাব আহমদ বাচ্চু। তারপর, করনার ছোবলে অকালে পরলোকে পাড়ি জমিয়েছেন এমন সকলের প্রতি শোক প্রকাশ করে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। সাম্প্রতি বাংলাদেশে একটি পূজামন্ডপে কোরান রাখা এবং এর জের ধরে উদ্ভূত উস্কানী প্রদান, সহিংসতা, সাম্প্রদায়িক হামলা, হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি কার্যকলাপের নিন্দা জানিয়ে আরেকটি প্রস্তাব গ্রহন করা হয়। শোক প্রস্তাব ও নিন্দা প্রস্তাব পাঠ করেন, যথাক্রমে সৈয়দ জাফর ও মুনিরা পারভিন। সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব দুটো গৃহীত হয়। সাহাব আহমদ বাচ্চুর সভাপতিত্বে স্মৃতিচারণ পর্বে অংশ নেন এহসানুল হক সুমন, শোয়েব তানজাম, রেডব্রীজ বারার ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার জোৎস্না ইসলাম, নজরুল ইসলাম কয়েস, মঞ্জুর মোর্শেদ, আহমাদুর রহমান আমিন, ফায়জুল হক রিপন, মোস্তফা কামাল মিলন, নজমুল ইসলাম বিপ্লব, শিপলু রহমান, আপেল মাহবুব, গোলাম মোহাম্মদ ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ। অতিথিদের মাঝে বক্তৃতা করেন আকবর আমিন বাবুল, এরিনা সিদ্দিকী সুপ্রভা, কাউন্সিলার সামসুল ইসলাম ও প্রশান্ত দত্ত পুরকায়স্থ। প্রায় সবাই মনস্তত্ত্বিক, চারিত্রিক ও মেধা বিকাশে শিশু-কিশোর জন্য খেলাঘরের মত সংগঠন গড়ে তোলার ও সেগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। স্মৃতিচারণ ও বক্তৃতাপর্বে বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক অপ্রীতিকর অথচ বর্বরোচিত ঘটনাবলীর তীব্র নিন্দা ও অনতিবিলম্বে এ ধরণের ন্যাক্কারজনক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকল্পে প্রগতিশীল শক্তিসমূহসহ সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয় আর এ সব অপকর্মের সঙ্গে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্তদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রত্যাশা করা হয়। দুপুরের খাবার শেষে শিশু-কিশোরদের পর্বে গান, কবিতা পাঠে ও অভিনয়ে অংশ নেয় প্রীয়ম পুরকায়স্থ, আলমীর, নিফিন, মেহজাবীন মাহমুদ, ন্যায় ডাগর, বিদ্যা ডাগর, আফরা খন্দকার, ইলহাম খন্দকার, তাহুর সাঈদ, তাইসির সাঈদ। এ পর্বটি পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন বিলেতের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী মুনিরা পারভিন। এরপর সাংস্কৃতিক পর্বে আবৃত্তি করেন আকবর আমিন বাবুল, সাহাব আহমদ বাচ্চু ও মুনিরা পারভিন। গান গেয়ে শোনান শিপলু রহমান, সৈয়দা তামান্না ইকবাল, কে জে বি কনক ও মোস্তফা কামাল মিলন। এতে সূত্রধরের ভূমিকা পালন করেন স্বয়ং মোস্তফা কামাল মিলন। 

এই অনুষ্ঠানে, আগামী বছরের ১৭ই জুলাই রোববার লন্ডনে শিশু-কিশোরদের জন্য একটি আনন্দমেলা করার লক্ষ্যে সাহাব আহমদ বাচ্চুকে মুখ্য আয়োজক, সৈয়দ ইকবালকে আহ্বায়ক এবং এহসানুল হক সুমন ও সৈয়দ জাফরকে যুগ্ম আহ্বাবায়ক করে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি আর মসুদ আহমেদ, সত্যব্রত দাস, ব্যরিষ্টার আকবর আমিন বাবুল, কাউন্সিলার জিলানী, কাউন্সিলার জোৎস্না ইসলাম আহমেদ, নুরুল ইসলাম পুতুল, মোস্তফা কামাল মিলন, সৈয়দ সাজমান আহমেদ, প্রশান্ত পুরোকায়স্থ ও নুরুর রহিম লোমানকে সদস্য করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়।

পরিশেষে অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকের উপস্থিতে সবার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে সর্বজন কর্তৃক উপভোগ্য দীর্ঘ এই অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি টানেন সাহাব আহমদ বাচ্চু এবং সৈয়দ ইকবাল।