জানালার গল্প

জানালার গল্প

প্রিয় রুমি
তোমার জন্য শুভেচ্ছা অফুরান।
আমি হবিগঞ্জের একটি হাইফাই দোতলা বাসার জানালায় দাঁড়িয়ে আছি। মিষ্টি বাতাস বইছে। বাতাসের দোলায় জানালার পর্দা এদিক ওদিক দোল খাচ্ছে। আমি এখানে ট্রেনিং করতে এসেছি। আকাশে কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ তার মতো করে আলো ছড়াচ্ছে। আমি মৃদু অন্ধকার ঘরের জানালায় দাঁড়িয়ে অরনীর গান শুনছি আর তোমার বাসার উড়ন্ত পর্দা দেখছি। তোমার জানালার ধারে সাদা কাশফুল আর আমার জানালার পাশে ঝিল। সেখানে অনেক কচুরিপানা।  আমি  ডাহুক পাখির কুক কুক ডাক শুনতে পাচ্ছি। মনে হচ্ছে ডিমে তা দিচ্ছে। আরও শুনতে পাচ্ছি একঝাঁক ব্যাঙের ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ। ওদের এখন মেটিং সিজন চলছে কিনা তাই এমন আনন্দ দিয়ে চারপাশ সরব করে তুলেছে। বিচিত্র ধরণের গ্রীষ্মকালীন পোকায় ঘর ভরে গেছে। ওরা বিচিত্র ধরণের গন্ধ ছড়াচ্ছে। কিন্তু আমার খুব একটা বিরক্তি লাগছেনা বরং ভাল লাগছে। মনে হচ্ছে আমি আমার বাড়িতেই আছি। তবে বাড়ির সাথে তফাৎ হচ্ছে আমাদের ঘর এরকম টাইলস ফিটিং হাইফাই না। আমি যেখানে আছি সেটা হবিগঞ্জ পিটি আইয়ের সুপার মেডামের সরকারি বাসা। সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে তিনি আমাকে আটদিনের জন্য থাকতে দিয়েছেন। তাই আমি তোমার সাথে জানালার গল্প বলতে পারছি। হোকনা আটদিনের বসবাস তাতে কী হয়েছে। পৃথিবী নামের এই গ্রহটিতেতো আমরা খুব অল্পদিনের মোসাফির। আমাদের সবার জীবনেইতো একটি করে জানালার গল্প থাকে। এই গল্প কারো জন্য আনন্দের আর কারো জন্য বেদনার। এই গানের লেখক আর শিল্পিকে আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে দিও। এখানে ট্রেনিং করতে এসে আমার খুব ভাল লেগেছে। আমার নিজের জেলা। সবার সাথে আগে থেকেই চেনা জানা। সবাই খুব খাতির যত্ন করেছেন। তোমার আজুলার জন্য শরৎবাবুর মহেশীয় মমত্ববোধ রইল।
 আজ আর লিখছিনা। তোমার জন্য আবারও একরাশ শুভেচ্ছা।
ইতি
আসমা