দাবি আদায়ে এক মুহূর্তেও সরে দাড়াঁবে না বিএনপি: ফখরুল

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

বিএনপি দাবি আদায়ে এক মুহূর্তেও সরে দাড়াঁবে না জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে।

মঙ্গলবার (৩০ মে) সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা ও দোয়া করতে আসেন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একদলীয় শাসনের দিকে যাত্রা করছে। যখন দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের পরাজিত করার জন্য সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। আজকের এই সময়ে আমরা আমাদের এই মহান নেতার শাহাদতবার্ষিকী পালন করছি। আমাদের সমগ্র জাতির কাছে তা প্রাসঙ্গিক।

তিনি বলেন, এই মহান নেতা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সমস্ত জাতি যখন অসহায়, তখন তিনি পুরো জাতিকে দিশা দেখানোর জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে জাতিকে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় যখন দেশ রাজনৈতিক ব্যর্থতায় চলছিল তখন এই মহান মুক্তিযোদ্ধা দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ত্রাণকর্তা হিসেবে আর্বিভূত হয়েছিলেন। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে দায়িত্ব পাওয়ায় তিনি পুরো বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ শুরু করেছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের তার সহধর্মনী গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে রেখেছে এই সরকার। ৩৫ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে তাদের দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই সময়ে আমাদের এই নেতার শাহাদতবার্ষিকী নতুন করে প্রেরণা যোগাবে। নতুন করে শপথ নিয়েছি হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার শপথ নিয়েছে বিএনপি।

সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমরা এই শপথ এখান থেকে নিয়েছি বলে জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, মামলাগুলোর রায়ে বোঝা যায় সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আমাদের কে দমন করতে চায়। তারা আমাদের নানাভাবে আমাদের আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চায়। এ আন্দোলন একদিনের না, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছি।

টুকু ও আমানের বিরুদ্ধে মামলার রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মনে করি এটা একটা ফরমায়েশি রায়। এ ধরনের রায় দিয়ে কোনো আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। জনগণ তাদের অধিকার অবশ্যই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আদায় করবে। আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। আমাদের দাবি তাদের পদত্যাগ সংসদ বিলুপ্ত করা ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এই অবস্থান থেকে এক মুহূর্তের জন্য আমরা সরে দাঁড়াব না।

এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মরণে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন ‘লাল সবুজের পতাকায়, জিয়া তোমায় দেখা যায়, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও লও লও সালাম, জিয়া তোমার স্মরণে ভয় করি না মরণে, জিয়া আমার চেতনা, জিয়া আমার বিশ্বাস’।

জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান উমর বীর উত্তম, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও খালেদা জিয়ার প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।