নিজেদের মাটিতে রংপুরের কাছে সিলেটের হার

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

যে উইকেটে সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব‌্যাটাররা ছটফট করেছে, সেই উইকেটে রংপুর রাইডার্সের ব‌্যাটারদেরও ছটফট করার কথা। কিন্তু রংপুরের বোলাররা যেরকম ফণা তুলে ছোবল মারতে পেরেছিলেন, সিলেটের বোলাররা সেরকম ফণা তুলে ছোবল মারতে পারেননি। ফলে ম‌্যাচে আর তীব্রতা সৃষ্টি হয়নি। অনেকটা একপেশে হয়ে উঠে।

আর রংপুরের ক্রিকেটারদের এরকম অপ্রতিরোধ্যতার কারণে সিলেটের ম‌্যাচ নিয়ে স্বাগতিক দর্শকদের মাঝে যেরকম উচ্ছ্বাসের আগুনের ঢেউ লেগেছিল সেখানে পানি ঢেলে দিয়েছে রংপুর। সিলেটকে দিয়েছে ৬ উইকেটে হারের স্বাদ।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিলেটের ৯ উইকেটে করা ৯২ রান রংপুর পাড়ি দেয় ১৫.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান করে। সিলেটের ৮ ম‌্যাচে এটি ছিল দ্বিতীয় হার। প্রথমে তারা কুমিল্লার কাছে হেরেছিল ৫ উইকেটে। হারলেও সিলেটের শীর্ষস্থান ক্ষুণ্ন হয়নি। ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারাই আছে যথারীতি সবার উপরে। রংপুরের ৭ ম‌্যাচে চতুর্থ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে শেষ চারে যাওয়ার লড়াইয়ে।

সিলেটের ইনিংসের সময় পিচ যেমন আচরণ করেছিল, বোলারদের হয়ে কথা বলছিল, রংপুরের ইনিংসের সময় সেরকম ভয়ংকর চেহারা ছিল না। অবশ‌্য পিচের এরকম চরিত্র বদল সিলেটের ইনিংসের মাঝামঝি পর্যায় থেকেই শুরু করেছিল। ৮.৪ ওভারে ১৮ রানে সিলেট ৭ উইকেট হারানোর পর সবাই যখন ধারণা করছিলেন, অলআউট হতে পারে বিপিএলের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে, তখন সেখানে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন দুই বোলার তানজিম হাসান সাকিব ও মাশরাফি বিন মুর্তজা। সিলেটের ৯২ রানের ৬২ রানই এসেছিল এই দুই ব্যাটারের ব্যাট থেকে। বল খেলেছিলেন ৫৭টি। ৪টি ছক্কা আর ৫টি চারও এসেছিল এসময়।

পিচের চরিত্র বদলের এই সুবিধাটুকুই কাজে লাগায় রংপুরের ব‌্যাটাররা। অবশ‌্য টার্গেট কম থাকায় তারা কোনো রকমের ঝুঁকিতেও যাননি। তারপরও সিলেটের বোলাররা বেশ আক্রমণ শুরু করেছিলেন। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও রনি তালকুদারের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর একপ্রান্ত দিয়ে উইকেট নিতে শুরু করেন সিলেটের বোলাররা।

মোহাম্মদ নাঈম ২১ বলে ২ চারে ১৮ রান করার পর রেজাউরের শিকার হয়ে ফিরে যাওয়ার পর মাশরাফি তার দ্বিতীয় ওভারেই পরপর দুই বলে মেহেদি হাসান (৮) ও শোয়েব মালিককে (০) ফিরিয়ে দিয়ে খেলাকে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। মোহাম্মদ আমির আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ৪ রানে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু অপরপ্রান্তে রনি তালকুদার খুঁটি গেড়ে বসেছিলেন। তাকে আর আউট করতে পারছিলেন না সিলেটের বোলাররা। ৬৬ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন হওয়ার পর রনি মোহাম্মদ নাওয়াজকে সঙ্গে নিয়ে পরে আর কোনো উইকেটের পতন হতে দেননি।

নাওয়াজ হয়ে উঠেন আক্রমণাত্মক। মাত্র ১৩ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে অপরাজিত ১৮ রান করলে রংপুরের জয় সহজতর হয়ে উঠে। রনির সঙ্গে তিনি পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৩.১ ওভারে অবিচ্ছিন্ন থাকেন ২৭ রান করে। রনি অপরাজিত থাকেন ৩৮ বলে ২টি করে চার ও ছক্কা মেরে ৪১ রানে।

১৭ রানে ৩ উইকেট ও ব‌্যাট হাতে ৪ রান করে ম‌্যাচ সেরা হয়েছেন রংপুরের আজমতউল্লাহ ওমরজাই।