নেপালে বিধ্বস্ত বিমানের সবাই নিহত

বাংলাভাষী ডেস্ক :

নেপালের পোখারায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৭২ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৫ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন।

গত তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশটিতে এটা সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা। ইয়েতি এয়ারলাইনসের বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পর অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। সেই সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এটিআর ৭২ মডেলের দুই ইঞ্জিনের বিমানটিতে মোট ৬৮ জন যাত্রী ছিলেন। বাকি চার জন ছিলেন বিমানটির কর্মী। দুর্ঘটনার জন্য যান্ত্রিক ত্রুটিকে দায়ী করেছে বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়।
রোববার সকালে ইয়েতি এয়ারলাইনসের যাত্রীবাহী বিমান এটিআর-৭২ সেতি গন্ডকি নদীর ধারের জঙ্গলে ভেঙে পড়ে। নেপাল সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘বিমানটি টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।’ যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন নেপালি ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। বাকিদের মধ্যে পাঁচ জন ভারতীয়, চার জন রাশিয়ান এবং দুই জন কোরিয়ার নাগরিক ছিলেন। এছাড়া আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের এক জন করে নাগরিক ছিলেন বিমানটিতে। এই ঘটনার পর মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল। দেশের এজেন্সিগুলোকে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।
নেপালে ১৯৯২ সালের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পরে এটাই সবচেয়ে বেশি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা। অ্যাভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্কের তথ্য অনুযায়ী, সেই বছর পাকিস্তানি এয়ারবাস এ৩০০ কাঠমান্ডুতে অবতরণ করতে গিয়ে একটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়। এই বিমানটি ১৫ বছরের পুরোনো ছিল বলে জানা যাচ্ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, দুই ইঞ্জিনের এটিআর ৭২ বিমানগুলো যৌথভাবে তৈরি করে এয়ারবাস এবং ইতালির লিওনার্দো কোম্পানি। ইয়েতি এয়ারলাইনসের এ ধরনের ছয়টি বিমান রয়েছে। নেপালে বিমান দুর্ঘটনা একেবারে বিরল নয়। গত এক যুগে নেপালে অন্তত আটটি বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে। যাতে যাত্রী ও ক্রু মিলে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে।
২০১৮ সালের ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশের ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের একটি যাত্রীবাহী বিমান। সেই দুর্ঘটনায় বিমানের মোট ৫১ জন যাত্রী এবং ক্রু নিহত হন। ২০ জন প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদের অনেকের আঘাত ছিল গুরুতর। গত বছরের ২৯ মে পোখারা থেকে পশ্চিমের শহর জমসমে যাওয়ার পথে ২২ জন যাত্রী নিয়ে তারা এয়ারের একটি বিমান নিখোঁজ হয়। পরে পাহাড়ের একটি খাঁজে ভেঙে পড়া বিমানটির সন্ধান পাওয়া যায়, যেখানে যাত্রীদের সবাই নিহত হয়েছিল। বিশ্বের সর্বোচ্চ ১৪টি পর্বত শৃঙ্গের আটটি নেপালে রয়েছে, যার মধ্যে হিমালয়ও অন্যতম। নেপালে যে কোনো সময় পরিবর্তনশীল আবহাওয়া এবং পাহাড়ের মধ্যে কঠিন এয়ারস্ট্রিপ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।