বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার প্রতিবাদ সভা

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার প্রতিবাদ সভা

মাহমুদুর রহমান শানুর 

৭২ এর ধর্ম নিরেপক্ষ সংবিধানে ফিরে যাওয়ার আহবান
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব,  শারদীয় দূর্গা পূজায়, গুজব ছড়িয়ে, পরিকল্পিত ভাবে ধারাবাহিক সাম্প্রদায়িক  হামলার প্রতিবাদে লন্ডনে,  একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার ডাকে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদ সমাবেশ। পূর্ব লণ্ডনে আলতাব আলী পার্কে প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী এই প্রতিবাদ সভা হয়।

সোমবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে শতাধিক মানুষ সমমনা বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে এসে জড়ো হন। প্রতিবাদ সভায় গণসংগীত ও প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন যুক্তরাজ্য উদীচী ও সত্যেনসেন স্কুল অব পারফর্মিং আর্টস। সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী কবিতা আবৃত্তি করেন যুক্তরাজ্য নির্মূল কমিটির সদস্য বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী মুনীরা পারভীন।

সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রুবি হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন নির্মুল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনসার আহমেদ উল্লাহ, যুক্তরাজ্য কমিটির সহ সভাপতি সৈয়দ আনাস পাশা, যুগ্ন সম্পাদক স্মৃতি আজাদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি হরমুজ আলী, যুক্তরাজ্য সিপিবির সম্পাদক কমরেড আবেদ আলী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি রফিকুল হাসান খান, সত্যেন স্কুলের সভাপতি গোপাল দাশ, সেকুলার বাংলাদেশ মুভমেন্টের সভাপতি কাউন্সিলর পুষ্পিতা গুপ্তা, সাধারণ সম্পাদক সাহিত্য পাল, বাংলাদেশ হিন্দু এসোসিয়েসন ইউকের সভাপতি প্রশান্ত পুরকায়স্থ, সাধারণ সম্পাদক সুজিত চৌধুরী,  যুক্তরাজ্য জাসদ সহসভাপতি মুজিবুল হক মনি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স কাউন্সিল ইউকের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত দাশ, বি হিউম্যান ফাস্ট মুভমেন্টের সভাপতি অজন্তা দেব রায়, মানবাধিকার নেতা সলিসিটর সৈয়দ ইকবাল, বারিস্টার সৈয়দ রুম্মান, ইঞ্জিনিয়ার প্রশান্ত দাশগুপ্ত, বারিস্টার কামরুল হাসান তুষার, জাসদ নেতা সাবুল শামসুজ্জামান, মাহমুদুর রহমান শাহনুর, ইউনাইটেড হিন্দু কালচারাল এসোসিয়েশনের সভাপতি গণেশ ঘোষ, মানবাধিকার নেতা সলিসিটর সাইদুজ্জামান সাঈদ, মোস্তফা কামাল মিলন, লেবার পার্টির নেতা মুরাদ কোরেশি, নারী নেত্রী সৈয়দা নাজনীন শিখা, হিন্দু ওয়েলফেয়ার এসেসিয়েশনের তপন মণ্ডল , বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যুক্তরাজ্য শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির আখতারুজ্জামান এবং ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া নারকীয় তান্ডবের প্রতি ঘৃণা জানাতে তারা কোন দল বা সংগঠন নয় বরং মানুষ হিসাবে বাঙালি  হিসাবে এখানে সমবেত হয়েছেন।
রাজনৈতিক দোষারোপ ও সুষ্ঠ বিচার না হওয়ার সংস্কৃতি এবং প্রগতিশীল শক্তিসমুহের অনৈক্যের কারনে বারবার সুবিধা আদায় করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এবং একটি নির্দিষ্ট  সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। বক্তারা বলেন  একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে সপ্তাহব্যাপী এই নারকীয় তান্ডব লীলা সরকার ও প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যার্থ হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দুস্কৃতিকারীদের দ্বারা পুজা মন্ডপ ও হিন্দু বাড়িঘরে আক্রমণের দায় কোনভাবেই এড়াতে পারে না।
রামু, নাসির নগর, শাল্লাসহ অতীতের কোন সাম্প্রদায়িক আক্রমণের সুষ্ঠ বিচার না হওয়ায় বক্তারা গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 
সভা অবিলম্বে ধর্মের নামে সন্ত্রাসী রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা ও সংখালঘু সংরক্ষণ আইন পাশ ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের জোর দাবী জানানো হয়। ৭২ এর ধর্ম নিরেপক্ষ সংবিধানে ফিরে যাওয়ার আহবান জানানো হয় সভা থেকে।