বয়ানে রামাদান -৩

বয়ানে রামাদান -৩

চৌধুরী হাফিজ আহমদ 

 আল ইসলাম কে পরিপূর্ণ করে যে জীবন ব্যবস্তা আল্লাহ তায়ালা আমাদের দিয়েছেন এর মধ্যে অন্যতম শক্ত ভিত্তি হচ্ছে মাহে রামাদান , রামাদানের গুরুত্ব আগে ও ছিল এখন ও আছে , রামাদানের প্রস্তুতি আসমানে নেয়া হয় আগে থেকেই , যে কোন উৎসব কে পালন করতে হলে এর আগাম প্রস্তুতি আবশ্যক , রামাদান মাস হচ্ছে আল কোরআনের জন্ম মাস তাই এর আয়োজন করতে লেগে যায় আগের কয়েক মাস - যেমন আমরা জানতে পাই জনাবে রাসুলুল্লাহ সঃ দুআ পাঠ করতেন আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগ না রামাদান , এর থেকেই প্রমানিত হয় আগে থেকেই চলে রামাদান কে ঘিরে বিশাল বিশাল আয়োজন , হবেই বা না কেন - আল কোরআন এমন এক কিতাব যা একমাত্র ও নির্ভুল নিয়ামত যাহাতে জীবন চালাতে সকল বিষয় বিস্তারিত বয়ান করা হয়েছে , আমাদের জানা নাই এমন ব্যাপার তো আছেই আছে এর উপরে বয়ান রয়েছে আগামীর কবরের হাশরের জাহান্নামের জান্নাতের , আল্লাহর গোলাম যাহারা তাহাদের জন্য আছে সু সংবাদ আল্লাহর অবাধ্য যাহারা রয়েছে তাহাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ দুঃ সংবাদ , জাহান্নামের আগে ও আজাব আছে তাহাদের জন্য জিল্লতি বেইজ্জতি রোগ অপমানিত লজ্জিত দুর্বল অহংকারী অপদস্ত হয়ে দুনিয়াতে জীবিত থাকতেই তড়পানো কাতরানো - এরা হচ্ছে মোনাফিক - গীবত খোর - মদখোর - সুদখোর - জিনাখোর - জুয়াখোর -বদ অভ্যাস কারী- গালি দান কারি- খোটা দাননকারী-মিথ্যা - প্রতারনা - টকানো - অপচয় কারী - সকল রকমের শাইতানী অভ্যাসের সহিত থাকে , নাস্তিক্যবাদের কথা বলে বিতর্ক করে ফিতনা করে এদের রেহাই নাই দুনিয়াতে শান্তি ও নাই আখিরাতে , তাহাদের প্রতি সতর্ক বার্তা যেমন থাকছে তেমনি শাস্তি নির্ধারিত , এরা ক্ষমার অযোগ্য কশ্মিন কালে ও এই সব শিরক কারী দের রক্ষা নাই , সু সংবাদ আবার রয়েছে সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর গোলামদের , এদের কোন চিন্তা নাই - সবর এখতিয়ার করে চলে সকল নেক কাজে জড়িত থেকে সমাজ ও জাতির কল্যানে নিয়োজিত রাখে আল কোরআনের আলোকে আমল করে থাকে - আমাদের জন্য জানা থাকা জরুরী - দুআ কবুলের শর্ত হচ্ছে হালাল খাওয়া , হালালে যে মর্যাদা রয়েছে তা হারামে নাই , হারামে দুনিয়ার আরাম দেখা গেলে ও বাস্তবিকতা ভিন্ন - দুনিয়াতেই হারামখোর দের শাস্তি শুরু হয়ে যায় নানা ভাবে , সত্য মিথ্যা হাক্ক বাতিলের পার্থক্য নির্ধারণ করতেই , রামাদানে সাওম এক বিশাল ভুমিকা রাখে - রামাদানে যেমন করনীয় আছে তেমনি বর্জনীয় ও প্রচুর , প্রতি রামাদানেই আল্লাহ তায়ালা আমাদের সুজুগ দেন রহমত বরকত ধরে রাখার কিন্তু আমাদের ব্যর্থতা তাই পারিনা সুফল ভোগ করতে ,রামাদানের প্রত্যেকটা মুহূর্ত খুব দামী এই মাসে নফল ইবাদত পায় মর্যাদা ফরজ ইবাদতের , ১ টাকার মুল্যহার হয়ে যায় শত তাকার , তাহবিহ বা দুআ মর্যাদা পায় কবুলের , কেননা আল কোরআনের খাতিরে এই মাসে ক্ষমার বিশেষ সুজুগ দিয়েছেন এমন কি নিকৃষ্ট পাপী ও যদি ফিরে আসে তাহাকে ও রহমের কোলে তুলে নেয়া হয় এবং ক্ষমা দিয়ে রেহাই দিয়ে পুনর্বাসন করা হয় , রামাদানের বরকতের বয়ান দিয়ে শেষ হবেনা এই এক মাসে যত দেয় রামাদান এর তুলনা অন্য কিছুতেই বর্ণনা দেয়া যাবেনা - আল্লাহ তায়ালা এত মহান তাহার ক্ষমতার একক নিদর্শন হচ্ছে রামাদানুল মুবারক , এই মাসে বর্জনীয় এবং অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে সকল বদ অভ্যাস বর্জনীয় যা তা হচ্ছে 

১,অপচয় 

২, অপব্যায়,

৩,অযথা সময় নষ্ট না করা 

৪,কাউকে কষ্ট না দেয়া 

৫,রাগ না করা 

৬,ঝগরা না করা ও গালি না দেয়া

৭, দৃষ্টি কে হিফাজত করা 

৮,মিথ্যা বেহুদা কথা গীবত হিংসা অশ্লিল কথা না বলা

৯,অতিরিক্ত না খাওয়া

১০ অতিরিক্ত না ঘুমানো

১১,অন্যের হাক্ক নষ্ট না করা 

১২, মদ জুয়া জিনা সুদ ইত্যাদি ত্যাগ করা 

এই রকম হাজারো বদ অভ্যাস ত্যাগ করার নাম ই হচ্ছে সাওম - শুধু উপোষ থাকা কে রোজা বলে আমরা চালিয়ে এর হাক্ক আদায় করতে পারবনা - করতে হবে কল্যান মুলক সকল কাজ - বৃক্ষ রোপণ - দান - খয়রাত - সাদাকা - লিল্লাহ - অন্যকে ইফতার করানো - মাখলুকের খিদমাত সহ নিজের পরিবারের সমাজের সকল কল্যান মুলক কাজ ও আঞ্জাম দিতে হবে সাথে সাথে , তাই আসুন রামাদানের মাস সবে মাত্র শুরু আমরা আমাদের পরিবর্তন করতে একটি কর্মসূচী নেই এতে এক দিকে থাকবে ভাল করার ইচ্ছা অন্য পৃষ্টে থাকবে মন্দ ত্যাগের লিস্ট - আল্লাহ যেন আমাদের হিদায়াত মুলক কাজ করার তাওফিক দান করেন , সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে লোভ লালসা - আমাদের সমাজে মেয়ের বাড়িতে ইফতার দেবার প্রথা কে না বলে প্রতিরোধ করতে হবে নির্মূল করতে হবে এই কু সংস্কার , তারাবীহ তে উপস্তিত থেকে ২০ রাকাত আদায় করতে হবে নিয়মিত - দিনে দারুল কিরাতে অংশ নিয়ে তিলাওয়াত করতে হবে সাহিহ ও শুদ্ধ , আল্লাহর সাথে কথোপকথনে যদি ভুল শব্দ প্রয়োগ করা হয় তবেই সকল অযোগ্য হয়ে যাব তাই কোরআন তিলাওয়াত একদম সাহিহ হতেই হবে , যত সাহিহ হবে ততই নেকী ও মঙ্গল , একটি আয়াতে পাব অফুরন্ত সাওয়াব এবং এই সাওয়াবেই আসবে কল্যান , দুআ করতেই হবে - আল্লাহর কাছে চাইতে লজ্জা নাই যত চাইব ততই যোগ্য হব , চাইতে চাইতেই যখন যোগ্যতা অর্জন হবে তখনি আল্লাহ তায়ালা আমাদের ইচ্ছে পুরন করবেন । সম্মানিত পাঠক সমাজ আমি আপনাদের সকলার কাছে দুআ চাই আল্লাহ যেন আমাকে নেক হায়াত হালাল রিজক সত্য ও সটীক জ্ঞান দান করেন যাহাতে আমি কুল মাখলোক এর খিদমতে থাকতে পারি এবং মহান রাব্বুল আল আমিনের গোলামিতে মৃত্যু পর্যন্ত থাকতে পারি , আমাদের সকল মৃত দের জন্য মাগফিরাতের জন্য দুয়া করব - মা বাবা স্বজন আত্মীয় ও নিজ নিজ প্রয়োজন এর জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করব , আল্লাহ যেন আমাদের সকলার নেক হাজত পুরা করে দেন সকল আশা আখাঙ্খা পুরন করেন আমরা যেন এক ও নে

ক হয়ে চলতে পারি , ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ । ০৪-০৪-২০২২ লন্ডন