মেঘ রোদ্দুরের সংলাপ

মেঘ রোদ্দুরের সংলাপ

 সত্যেন্দ্রনাথ পাইন। 

 মেঘ বললো- রোদ্দুর কে-- কতজনের নিমন্ত্রণ? 

 রোদ্দুর বললো- আমার কুটুম কম ভাই, 

  মস্তান বেশি। তাদের জন্যেই যত

 আমার রক্তাক্ত বিষুবরেখা। কাকে রেখে

 কাকে যে ছাড়ি!? আমার হয়েছে যত্ত জ্বালা

মেঘ বললো-- সে কি? ওসব মস্তান তস্তান হটাও। 

তারা কি সব নাকি! তারা তো খেয়েই

  পালাবে। কাজের কাজ কি করবে? 

রোদ্দুর বললো- সে কিগো! হ্যাঁ , তারা জোর করে

  কাউকে তুলে এনে কর্তার সামনে দাঁড় করাবে। 

এ গুলো কি কুটুমেরা পারতো, বলো? 

আমাদের সম্পত্তির যা কিছু সবই তো ঐ ফাঁকি দিয়ে গড়া। 

 এগুলো বাঁচাতে কুটুমের দরকার নেই। দরকার ঐ

 মস্তান মস্তিষ্কের। তারা বলবে--"- হটাও"। 

হটে যাবে সব্বাই। লাঠি বন্দুক বোমা কিচ্ছু লাগবে না। 

 মেঘ বললো-- না বাবা, আমি মাঠে, ঘাটে, বাড়িতে

যাই। কোনও মস্তান দের প্রয়োজন পড়ে না তো। 

তোমার কেন দরকার হয় বলোতো------- যত 

সবুজের সমারোহ হয় আমারই ওপর ভর করে। 

তুমি তো সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করো। 

তাই - ই বোধহয় তোমার মস্তান প্রয়োজন হয় !! 

  

তখনই রোদ্দুর রেগে বললোঃ- আমার সঙ্গে লেগো না বলছি। লেগে কোনও লাভ হবে না। জানো তো আমি কে! 

আমি এম এল এ পাড়ায় বাস করি। আমার

 কাজে বিঘ্ন ঘটিয়ো না। আমার তেজে পৃথিবীর সবকিছু

 জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমি না-----

 তুমি তো বৃষ্টি হয়ে মাত্র কয়েকটা মাস দেখাশোনা কর। 

তারপর আর কেউ কি তোমাকে চায়!আমাকে কিন্তু সারাক্ষণ

দেখার জন্যে সকলেই খোঁজাখুঁজি করে। 

 আমি জন্মালে আছি, মরলেও আছি। শ্রাদ্ধের আসরেও আছি, বিয়ের পিঁড়িতে ও আছি। 

তোমার তো সবখানেই প্রবেশ নিষেধ। আমার উদ্দেশ্যে অঞ্জলি দেয় কত্ত পূণ্যার্থী। আর তোমার জন্যে প্লাষ্টিকের ত্রিপলে ছেয়েও সবাই ঘেন্না করে। 

মেঘ বললোঃ - তাই নাকি! জানতাম না তো! দাঁড়াও। 

(এই বলে সে একবার ধর্না দিল, অনশন করলো। চাতক পাখির মতো সবাই তখন বৃষ্টি চাইলো। রোদ্দুরের ওপর রেগে যা তা বলতে লাগলো। মেঘ তবুও মাথা গলালো না। 

 সরকারি অফিস থেকে খরা ঘোষিত হলো। ) 

 মেঘ বললো -- দেখলে আমার কত্ত তেজ! আমার কত্ত গুন

 রোদ্দুর বললো-- ছিঃ ছিঃ। আমি যদি কিছু নাও করি

তবুও আমাকেই চাইবে সকলে। 

কত নারী একবার আমাকে না দেখলে জল স্পর্শ করবে না। 

আমি তাদের কথা ভেবে একবার হলেও দেখা দিই। 

  তোমার জন্য শুধু ঘৃনা আর ঘৃনা! । মস্তান কেন দরকার বোঝো তাহলে।