মানিকের সাংবাদিকতা, লেখনী ও গবেষণা জাতিকে অনেক দিয়েছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

মানিকের সাংবাদিকতা, লেখনী ও গবেষণা জাতিকে অনেক দিয়েছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

বাংলাভাষী ডেস্কঃ

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, সময় এখন চমৎকার- আসুন উন্নয়নের জন্য আমরা একযোগে কাজ করি। কাজের জন্য টাকা কোনো সমস্যা নয়। প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা-চেতনা অত্যন্ত আধুনিক- যা আমাদেরকেও বিস্মিত করে। সবকিছুতেই তিনি নতুনত্বের ছাপ দেখতে চান। হোক সেটা ছাত্রীদের হোস্টেল বা প্রাথমিক বিদ্যালয়। এমন কর্মপ্রাণ নেত্রীর সাথে কাজে করে আমি পুলকিত। 

সিলেট প্রেসক্লাব আয়োজিত সিলেট প্রেসক্লাব-মুহিবুন্নেছা সম্মানা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সোমবার সন্ধ্যায় ক্লাবের আমীনূর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে দৈনিক সিলেটের ডাক-এর নির্বাহী সম্পাদক ও প্রবীন সাংবাদিক আব্দুল হামিদ মানিককে এ পদক প্রদান করা হয়।

সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পদক আব্দুর রশিদ মো. রেনুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন-সিলেট সিটি কর্পোরেরশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

সম্মাননা পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আব্দুল হামিদ মানিক তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আহমেদ নূর ও ইকরামুল কবির, সিলেট প্রেসক্লাবের আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ক্লাবের নির্বাহী সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের একটি রাজনৈতিক অভিলাষ রয়েছে। তা পূর্ণ করতে চাই। সেটি হচ্ছে গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, দারিদ্র্য দূর করে দেশের আধুনিকায়ন- যেখানে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে, বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে ওঠবে। তিনি বলেন, আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। তা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত হাওরাঞ্চল ও ভাটি বাংলার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে। আর সেই সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নিজেও ভাটির মানুষের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নমূলক কাজের রূপরেখা তৈরী করেন। আমরা তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করি। বৃহত্তর সিলেটের উন্নয়নের ব্যাপারে শেখ হাসিনারও আগ্রহ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনসহ বৃহত্তর সিলেটের রাস্তাঘাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নে বহু প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সিলেট-বাদাঘাট-বিমানবন্দর সড়ক, রাণীগঞ্জ সেতু শিগগিরই শেষ হবে। বর্তমান সময়ের চেয়ে আরও ৩ ঘন্টা কম সময়ে সুনামগঞ্জের মানুষ যাতে রাজধানীতে যাতায়াত করতে পারে- সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় উড়াল সেতু, রেল লাইন ও সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজে তদারকি করছেন। জনকল্যাণমুলক যেকোন উন্নয়ন প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর কাছে অগ্রাধিকার পায়। 

তিনি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে আরও বেশি করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রেরণের তাগাদা দিয়ে বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে তাঁর সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। 

সংবর্ধিত ব্যক্তি আব্দুল হামিদ মানিকের বহুমুখী প্রতিভার প্রশংসা করে বলেন তিনি একজন চমৎকার ব্যক্তি। তাঁর সাংবাদিকতা, লেখনী ও গবেষণা জাতিকে অনেক দিয়েছে। সাহিত্য সাংবাদিকতায় তিনি যে অবদান রেখে যাচ্ছেন-তার বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয়। তিনি আব্দুল হামিদ মানিকের সুদীর্ঘ-সুস্থ জীবন কামনা করেন। সিলেট প্রেসক্লাব-মুহিবুন্নেছা সম্মাননা পদক প্রবর্তন করায় সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকনের পরিবারকেও মন্ত্রী ধন্যবাদ জানান। তিনি এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আব্দুল হামিদ মানিক একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও গবেষক। তিনি সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। প্রেসক্লাব তাঁকে সম্মানিত করায় আমি অত্যন্ত খুসি হয়েছি। গুণীব্যক্তিদের সম্মানিত না করলে সমাজে গুণী জন্মায় না। সিটি মেয়র বলেন, সিলেট নগর উন্নয়নে আমি যখনই পরিকল্পনামন্ত্রীর স্মরণাপন্ন হয়েছি; তখনই তিনি উদার হস্তে এগিয়ে এসেছেন। বৃহত্তর সিলেটের উন্নয়নে পরিকল্পনামন্ত্রীর আগ্রহে আমি অভিভূত। সিলেটের উন্নয়নে আমরা সবাই এক বলে মন্তব্য করেন আরিফুল হক চৌধুরী। 

পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আব্দুল হামিদ মানিক অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, এ সম্মাননা প্রদানে আমি খুশি- এটা আমার জন্য অনুপ্রেরণা। তিনি এ পদক প্রবর্তনে সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী পরিবারের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং তাঁকে মনোনীত করায় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।   

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সহ-সভাপতি এম এ হান্নান ও আব্দুল কাদের তাপাদার, সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান আতা, হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী, মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর ও মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিনিয়র সদস্য আব্দুল মালিক জাকা, কোষাধ্যক্ষ কাউসার চৌধুরী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ খালেদ আহমদ ও মো. আফতাব উদ্দিন, পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক কবির আহমদ, নির্বাহী সদস্য আশকার ইবনে আমিন লস্কর রাব্বী ও এম আহমদ আলী, গল্পকার সেলিম আওয়াল, ক্লাব সদস্য আব্দুল বাতিন ফয়সল, মো. মুহিবুর রহমান, চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, মো. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, আনাস হাবিব কলিন্স, শাহ মুজিবুর রহমান জকন, মো. দুলাল হোসেন, নাজমুল কবীর পাভেল, আবু সাঈদ মো. নোমান, সিন্টু রঞ্জন চন্দ, শেখ আশরাফুল আলম নাসির, খালেদ আহমদ, শ্যামানন্দ দাশ, শাকিল আহমদ সোহাগ, এটিএম তুরাব, এম রহমান ফারুক, আবুল কালাম কাওছার, খাদিজা বুশরা নূর প্রমুখ।