রাবিতে সংঘর্ষে আহত শতাধিক, পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

স্থানীয়দের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলয়। দফায় দফায় চলছে সংঘর্ষ। এখন পর্যন্ত আহত ৪০ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার অধিকাংশই শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া এখনো রোগী ভর্তি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে আগুনে পুড়ছে বিনোদপুর এলাকার দোকানপাট। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশ ফাঁড়িতেও। পরিস্থিতি সামলাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে এই সংর্ঘষ শুরু হয়। যা এখনো চলমান। এরইমধ্যে পুড়ে ছাই হয়েছে অনেক দোকানপাট। পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও কাজ করছে। এই সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীসহ শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। অন্যান্য আহত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ নগরীর আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ জানান, এখন পর্যন্ত ৪০ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন গুরুতর। তবে ঘটনার পরপরই হাসপাতালে ডাক্তারসহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি সামলাতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ঘটনাস্থলে যান। দুই পক্ষকেই শান্ত করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু।

জানা গেছে, বগুড়া থেকে মোহাম্মদ বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির চালক শরিফুল ও সুপারভাইজার রিপনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় আকাশের।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট এসে আবারও সুপারভাইজারের সঙ্গে ঝামেলা বাধে তার। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং স্থানীয় দোকানদারদের উপর চড়াও হন।

একপর্যায়ে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া করে। এসময় দায়িত্ব পালনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ২ জন সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুরে কয়েকটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

এ বিষয়ে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই সংশ্লিষ্ট থানা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কাজ করছে।