শবে মেরাজ কি ? পবিত্র শবে মেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

শবে মেরাজ কি ? পবিত্র শবে মেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

নূরজাহান শিল্পী 

লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী, যা সচরাচর শবে মেরাজ হিসাবে আখ্যায়িত, ইসলাম ধর্মমতে যে রাতে ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) অলৌকিক উপায়ে উর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং স্রষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
মুসলমানরা এবাদত-বন্দেগীর মধ্য দিয়ে এই রাতটি উদযাপন করেন। ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামায মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক অর্থাৎ (ফরজ) নির্ধারণ করা হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিধান নির্দিষ্ট করা হয়।

মেরাজ রজনীর গুরুত্ব ঃ
সর্বশেষ নবী হজরত মোহাম্মাদ (সা.) এর ২৩ বছরের নবুওয়তি জীবনের অন্যতম অলৌকিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হলো “মেরাজ”। মেরাজে গমন করে রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আদেশসহ ইসলামী সমাজ পরিচালনার বিধি-বিধান নিয়ে আসেন। প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মাদ (সাঃ) বিশ্ব মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সর্বজনীন জীবন ব্যবস্থা হিসেবে রূপ দেয়ার জন্য তিনি আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পেয়েছিলেন মেরাজ রজনীতে। এ জন্য এ রাতটি মুসলমানদের কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ 

“পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রজনীর কিয়দাংশে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদুল হারাম হতে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশকে আমি করেছিলাম বরকতময়। তাঁকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্যে। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোত, সর্বদ্রষ্টা। (সূরা বাণী ইস্রাঈলঃ ১)

মেরাজ কখন সংঘটিত হয়েছিল?
২৭ রজব তায়েফ থেকে ফেরত আসার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর মিরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল।
মিরাজ হয়েছিল স্বশরীরেঃ
ইমাম ইবনুল কায়্যেম (রঃ) বলেনঃ বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে মিরাজ হয়েছিল স্বশরীরে। তিনি প্রথমে বুরাকে আরোহন করে মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণ করলেন। জিবরীল ফেরেশতা সাথেই ছিলেন। মসজিদের দরজার হাতলের সাথে বুরাক বেঁধে সেখানে নেমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবীদের ইমাম হয়ে নামায পড়লেন। মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণকে ‘ইসরা অর্থাৎ রাত্রির ভ্রমণ বলা হয়। সেরাত্রেই বায়তুল মাকদিস হতে উর্ধাকাশ পর্যন্ত মিরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়।
আনাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমি একদা কাবাঘরের নিকট ঘুমন্ত ও জাগ্রত অবস্থার মাঝামাঝি অবস্থায় ছিলাম। এমন সময় হিকমত (জ্ঞান) ও ঈমানে পরিপূর্ণ একটি স্বর্ণের পেয়ালা আনয়ন করা হলো। আমার বক্ষ হতে পেট পর্যন্ত ফেঁড়ে যমযমের পানি দিয়ে পেটের ভিতরের অংশ ধৌত করে তা ঈমান ও হিকমতের মাধ্যমে পরিপূর্ণ করে দেয়া হলো। তারপর আমার নিকট খচ্চরের চেয়ে একটু ছোট এবং গাধার চেয়ে বড় একটি সাদা রঙ্গের বুরাক নামক একটি বাহন আনয়ন করা হল। তিনি প্রথমে বুরাকে আরোহন করে মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণ করলেন। জিবরীল ফেরেশতা সাথেই ছিলেন। মসজিদের দরজার হাতলের সাথে বুরাক বেঁধে সেখানে নেমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবীদের ইমাম হয়ে নামায পড়লেন। মাসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণকে ‘ইসরা অর্থাৎ রাত্রির ভ্রমণ বলা হয়।
অতঃপর তিনি সিঁড়ির মাধ্যমে উর্ধাকাশে ভ্রমণ শুরু করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ দুনিয়ার আকাশের নিকটবর্তী হলাম। জিবরীল ফেরেশতা আমার সাথেই ছিল। উপর থেকে আগমণকারীর পরিচয় জানতে চেয়ে জিজ্ঞেস করা হলো, কে? উত্তরে জিবরীল বললঃ আমি জিবরীল। আবার জিজ্ঞেস করা হলোঃ আপনার সাথের লোকটি কে? তিনি বললেনঃ মুহাম্মাদ। বলা হলোঃ তাকে কি আসতে বলা হয়েছে? জিবরীল বললেনঃ হ্যাঁ। আকাশের ফেরেশতাগণ বললেনঃ স্বাগতম, শুভ হোক তাঁর আগমণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
প্রথম আকাশে আমি আদম (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি আমাকে স্বাগতম জানিয়ে বললেনঃ আমার ছেলে ও নবীর আগমণ শুভ হোক।
দ্বিতীয় আকাশে যাওয়ার সময় আমাদেরকে একই প্রশ্ন করা হল। সেখানে গিয়ে আমি ঈসা এবং ইয়াহইয়া (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তাঁরা উভয়ই আমাকে সমাদর করলেন এবং স্বাগতম জানালেন।
তৃতীয় আকাশে ইউসূফ (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সালাম দিলাম। তিনিও আমাকে স্বাতম জানিয়ে বললেনঃ আমার ভাই ও নবীর আগমণ শুভ হোক।
এমনিভাবে চতুর্থ আকাশে গিয়ে ইদরীস (আঃ)।
পঞ্চম আকাশে হারুন (আঃ)।
ষষ্ঠ আকাশে মূসা (আঃ)এর সাথে দেখা করলাম। মূসা (আঃ)কে সালাম দিয়ে বিদায় নিয়ে চলে আসার সময় তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। তাঁকে ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! এই ছেলেটিকে আমার অনেক পরে নবী হয়ে দুনিয়াতে প্রেরণ করা হয়েছে কিন্তু আমার চেয়ে অধিক সংখ্যক উম্মাত নিয়ে আমার পূর্বেই জান্নাতে প্রবেশ করবে।
পরিশেষে সপ্তম আকাশে গমণ করলাম। উপর থেকে আগমণকারীর পরিচয় জানতে চেয়ে জিজ্ঞেস করা হলঃ কে? উত্তরে জিবরীল বললেনঃ আমি জিবরীল। আবার জিজ্ঞেস করা হলোঃ আপনার সাথের লোকটি কে? তিনি বললেনঃ মুহাম্মাদ। বলা হলোঃ তাকে কি আসতে বলা হয়েছে? জিবরীল বললেনঃ হ্যাঁ। আকাশের ফেরেশতাগণ বললেনঃ স্বাগতম, শুভ হোক তাঁর আগমণ। সপ্তম আকাশে গিয়ে ইবরাহীম (আঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি বললেনঃ আমার সন্তান ও নবীকে স্বাগতম।

মিরাজের রাত্রিতে নবী (সাঃ) যে সমস্ত নিদর্শন দেখেছেনঃ তম্মধ্যে:
১) মানব জাতির পিতা আদম (আঃ)কে দেখেছেন। তার ডান পাশে ছিলে শহীদদের (জান্নাতীদের) রূহ এবং বাম পাশে ছিল জাহান্নামীদের রূহ।
২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম বলেন: অতঃপর আমার সামনে বায়তুল মামূর উম্মুক্ত করা হলো। বায়তুল মামূর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে জিবরীল বললেনঃ এটি হলো বায়তুল মামূর। এতে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা নামায আদায় করে। এক বার যে সেখান থেকে বের হয়ে আসে কিয়ামতের পূর্বে সে আর তাতে প্রবেশের সুযোগ পাবেনা।
৩) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম বলেন: অতঃপর আমার জন্যে সিদরাতুল মুনতাহা তথা সিমান্তের কূল বৃক্ষ উম্মুক্ত করা হল। এই বৃক্ষের ফলগুলো ছিল কলসীর ন্যায় বড়। গাছের পাতাগুলো ছিল হাতীর কানের মত বৃহদাকার।
৪) তিনি গাছের গোড়াতে চারটি নদী দেখতে পেলেন। দু’টি চলে গেছে ভিতরের দিকে এবং দুটি চলে গেছে বাহিরের দিকে। জিবরীলকে আমি এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ ভিতরের দিকে প্রবাহিত নদী দুটি জান্নাতে চলে গেছে এবং বাহিরের নদী দুটি হলো ফোরাত ও নীল। ফোরাত ও নীল দেখার অর্থ হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর মিশন অচিরেই ঐ নদী দুটির অঞ্চলে পৌঁছে যাবে এবং ঐ সমস- অঞ্চলের অধিবাসীরা যুগে যুগে ইসলামের পতাকা বহন করবে। অর্থ এই নয় যে এদুটি নদী জান্নাত থেকে বের হয়ে এসেছে।
৫) মিরাজের রাত্রিতে তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় জিবরীল ফেরেশতাকে আসল আকৃতিতে দেখলেন। অথচ ইতোপূর্বে তিনি আরেকবার দুনিয়াতে তাঁকে দেখেছিলেন।

৬) তিনি বেনাযীর শাস্তি দেখেছেন। সহীহ বুখারীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
“আমরা এক শায়িত ব্যক্তির কাছে আসলাম। তার মাথার কাছে পাথর হাতে নিয়ে অন্য একজন লোক দাড়িয়ে ছিল। দাড়ানো ব্যক্তি শায়িত ব্যক্তির মাথায় সেই পাথর নিক্ষেপ করছে। পাথরের আঘাতে তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং পাথরটি বলের মত গড়িয়ে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। লোকটি পাথর কুড়িয়ে আনতে আনতে আবার তার মাথা ভাল হয়ে যাচ্ছে। দাড়ানো ব্যক্তি প্রথমবারের মত আবার আঘাত করছে এবং তার মাথাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিচ্ছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সফরসঙ্গী ফেরেশতাদ্বয়কে জিজ্ঞেস করলেনঃ কি অপরাধের কারণে তাকে এভাবে শাস্তি দেয়া হচ্ছে? উত্তরে তারা বললেনঃ এব্যক্তি কুরআন শিক্ষা করেছিল। কিন্তু কুরআন অনুযায়ী আমল করেনি এবং সে ফরজ নামাযের সময় ঘুমিয়ে থাকত। কিয়ামত পর্যন্ত তাকে এভাবে শাসস্ত দেয়া হবে। (সহীহ বুখারী)

৬) তিনি সুদখোরের শাসি- দেখেছেন। সহীহ বুখারীতে সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর দীর্ঘ হাদীছে 
“আমরা একটি রক্তের নদীর কাছে আসলাম। দেখলাম নদীতে একটি লোক সাঁতার কাটছে। নদীর তীরে অন্য একটি লোক কতগুলো পাথর একত্রিত করে তার পাশে দাড়িয়ে আছে। সাঁতার কাটতে কাটতে লোকটি যখন নদীর কিনারায় পাথরের কাছে দাড়ানো ব্যক্তির নিকটে আসে তখন দাড়ানো ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে। পাথর মুখে নিয়ে লোকটি আবার সাঁতরাতে শুরু করে। যখনই লোকটি নদীর তীরে আসতে চায় তখনই তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কারণ জানতে চাইলে ফেরেশতাদ্বয় বললেনঃ এরা হলো আপনার উম্মতের সুদখোর”। (সহীহ বুখারী)

৭) তিনি ইয়াতীমের মাল আত্মসাৎকারীকেও দেখেছেন। তাদের ঠোঁটের আকার আকৃতি ছিল উটের ঠোঁটের মত। তারা পাথরের টুকরোর মত আগুনের ফুলকী মুখের মধ্যে পুরতেছিল এবং সেগুলো পায়খানার রাস্তা দিয়ে বের হচ্ছিল।

৮) তিনি ব্যভিচারী নারী পুরুষের শাস্তি দেখেছেন। সহীহ বুখারীতে সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর দীর্ঘ হাদীছে কবরে ব্যভিচারীর ভয়াবহ শাস্তির বর্ণনা এসেছে। 
“আমরা একটি তন্দুর চুলার নিকট আসলাম। যার উপরিভাগ ছিল সংকীর্ণ এবং ভিতরের অংশ ছিল প্রশস্ত। তার ভিতরে আমরা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম। দেখতে পেলাম তাতে রয়েছে কতগুলো উলঙ্গ নারী-পুরুষ। তাদের নিচের দিক থেকে আগুনের শিখা প্রজ্বলিত করা হচ্ছে। অগ্নিশিখা প্রজ্ব্বলিত হওয়ার সাথে সাথে তারা উচ্চঃস্বরে চিৎকার করছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কারণ জানতে চাইলে ফেরেশতাদ্বয় বললেনঃ এরা হলো আপনার উম্মতের ব্যভিচারী নারী-পুরুষ”। 
ব্যভিচারীর শাস্তির অন্য একটি 
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজের রাত্রিতে একদল লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন তাদের সামনে একটি পাত্রে গোশত রান্না করে রাখা হয়েছে। অদূরেই অন্য একটি পাত্রে রয়েছে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা গোশত। লোকদেরকে রান্না করে রাখা গোশত থেকে বিরত রেখে পঁচা এবং দুর্গন্ধযুক্ত, কাঁচা গোশত খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা চিৎকার করছে এবং একান্ত অনিচ্ছা সত্বেও তা থেকে ভক্ষণ করছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিবরীল ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেনঃ এরা কোন শ্রেণীর লোক? জিবরীল বললেনঃ এরা আপনার উম্মতের ঐ সমস্ত পুরুষ লোক যারা নিজেদের ঘরে পবিত্র এবং হালাল স্ত্রী থাকা সত্বেও অপবিত্র এবং খারাপ মহিলাদের সাথে রাত্রি যাপন করেন 
৯) জান্নাত ও জাহান্নাম দেখেছেন।
১০) তিনি সেই রাত্রে জাহান্নামের প্রহরী মালেক ফেরেশতাকে দেখেছেন। তাঁর দিকে ফিরে তাকাতেই তিনি আমাকে প্রথমেই সালাম দিলেন। 
১১) বায়তুল মাকদিসে নবীদের ইমাম হয়ে নামায পড়েছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকালে ঘুম থেকে উঠে সে রাত্রিতে দেখে আসা নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে যখন কুরাইশদেরকে সংবাদ দিলেন, তখন তারা এই ঘটনাকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর উপর তারা অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিল। তারা তাঁর নিকট বায়তুল মাকদিসের বর্ণনা পেশ করার দাবী জানালো। আল্ল্লাহ বায়তুল মাকদিসে দৃশ্য তার চোখের সামনে উম্মুক্ত করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখে দেখে সেখানকার সকল নিদর্শন বলে দিলেন। তারা একটি কথাও অস্বীকার করতে পারলনা।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমি একদা কাবার প্রাঙ্গনে ছিলাম। কুরাইশরা আমাকে বায়তুল মাকদিসের এমন জিনিষ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল যা আমার স্বরণ ছিলনা। এতে আমি সংকটে পড়ে গেলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ আমার জন্যে বায়তুল মাকদিসকে চোঁখের সামনে উঠিয়ে ধরলেন। দেখে দেখে আমি তাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিলাম।

হে আল্লাহ শবে মেরাজের পবিত্র রজনীতে বেশী বেশী করে ইবাদত করার তৌফিক দিও |(আমিন )