শৈল্পিক কবি নূরজাহান শিল্পী

শৈল্পিক কবি নূরজাহান শিল্পী


আফতাব চৌধুরী

নূরজাহান শিল্পী একজন শৈল্পিক কবি। বর্তমানে তিনি লন্ডনে বসবাস করছেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি কবিতার পাশাপাশি প্রবন্ধ, নিবন্ধ লিখছেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। সম্প্রতি পাণ্ডুলিপি প্রকাশন থেকে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কুম্ভ গহনে’ প্রকাশিত হয়। অত্যন্ত উন্নতমানের কাব্যগ্রন্থটির একটি কপি আমাকে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। এরকম একজন গুণী কবির বই হাতে পেয়ে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। আমার দুর্ভাগ্য-শত চেষ্টা করেও কবিতা লিখতে পারিনি এবং এখনও পারিনা। তবে আমি যা পারিনা, যারা তা পারে, আমি তাদেরকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি, স্যালুট দেই। এদিক বিবেচনায় উপলব্ধি করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে নূরজাহান শিল্পী আমার নিকট অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র। গ্রন্থটিতে সন্নিবেশিত ৫৪টি কবিতার মধ্যে বেশ ক’টি কবিতা আমি পড়েছি। গ্রন্থটি সম্পর্কে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও ভাষা বিশেষজ্ঞ ড. সেলু বাসিত’র চমৎকার অভিমত পড়েছি। এছাড়াও পড়েছি বিশিষ্ট লেখক, প্রকাশক, সাংবাদিক ও সংগঠক পাণ্ডুলিপি প্রকাশনের স্বত্ত্বাধিকারী বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সলের ঋদ্ধ চমৎকার ফ্যাপটি। এই ফ্যাপ থেকে কবি নূরজাহান শিল্পীর কাব্যমনন সম্পর্কে একটি চমক লাগানো সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। সুন্দর ঝকঝকে মলাটে আবদ্ধ ৭২ পৃষ্ঠার গ্রন্থটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন অলিউর রহমান খান। অনিন্দ সুন্দর প্রচ্ছদ দেখেই অনেকে  গ্রন্থটি পাঠে আগ্রহী ও কৌতূহলী হয়ে উঠবে। কবি তার গ্রন্থটিকে তার বাবা ও মা’র জন্য উৎসর্গ করেছেন। উৎসর্গে উৎসর্গকৃত কবিতার এগারো লাইন পড়ে খুবই আমি অভিভূত হয়েছি। তাঁর চিন্তা-চেতনার শুদ্ধতায় মনে হচ্ছে সমাজ থেকে শ্রদ্ধাবোধ এখনো বিলুপ্ত হয়নি। বইটির বিনিময় মূল্য ১৭৫ টাকা নির্ধারিত থাকলেও যিনি ২৯টি কবিতার কাব্যগ্রন্থটি পড়বেন তারা অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন যে গ্রন্থটি একটি অমূল্য সম্পদ। কবির জন্ম ২২শে ফেব্রুয়ারী। ফেব্রুয়ারী আমার জন্য এক অনন্য মাস, এ মাসেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমার প্রিয়তমা সহধর্মীনি আর এ মাসেই তিনি ইন্তেকাল করেন। কাব্যগ্রন্থে কবির জন্মের মাস উল্লেখ থাকলেও সনের উল্লেখ কোথাও খোঁজে পাইনি। ভবিষ্যতে কবিকে নিয়ে নিশ্চয়ই অনেক লেখা হবে। তাঁকে নিয়ে গবেষণা করা হবে। এজন্য কবির জন্মের দিন, তারিখ, মাস, সন ইত্যাদির প্রয়োজন হবে। আমার মনে হয় এটা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। ছবি দেখে অনুমান করা যায় কবির বয়স ৩৫-এর এদিক ওদিক হবে। তিনি ইনশাআল্লাহ আরো অনেক দিন বেঁচে থাকবেন এবং তাঁর লেখা অনেক গ্রন্থ আমাদেরকে উপহার দিবেন। তার লেখা পড়ে আমাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে। একদিন কবির সুনাম, যশ, সুখ্যাতি সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। তাঁর কবিতার মান দেখে আমি নির্দ্ধিধায় বলতে পারি তিনি একজন অসাধারণ কবি ও মেধাবী মহিলা।
এই মেধাবী এবং সম্ভাবনাময়ী কবির জন্মদিন উপলক্ষে ও একই সাথে তার কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান উপলে পাণ্ডুলিপি প্রকাশনের উদ্যোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সংগঠক, লেখক ও প্রকাশক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল। অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন লেখক ও  শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ লে. কর্নেল (অব.) এম. আতাউর রহমান পীর, লে. কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কবি নিজাম উদ্দিন সালেহ, ছাড়কার ও সাংবাদিক আবদাল মাহবুব কোরেশী, কবি আয়েশা মুন্নি, সাংবাদিক আবু বকর আল আমিন, শাহ সামিন ইয়াসার, কবি ও প্রাবন্ধিক আব্দুল হক, কবি কানিজ আমেনা কুদ্দুস, নাসরিন আক্তার, কবি পপি রশিদ,  জুই ইসলামসহ অনেকেই। অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কবি নূরজাহান শিল্পীর ছোটবোন, ভগ্নীপতি, নিকটাত্মীয়, মিসেস আলীসহ অনেকেই। উপস্থিত সকল আলোচকই কবির এ দূর্লভ বইটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। সাংবাদিক, কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক ক্বারী মোহাম্মদ আবদুল বাছিতের পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন তরুণ সাংবাদিক টিভি উপস্থাপক আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ। অনুষ্ঠান শেষে নৈশভোজে উপস্থিত সবাইকে আপ্যায়িত করা হয়।

 লেখক : সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।