সঙ্গীত থেরাপি

সঙ্গীত থেরাপি

আব্দুছ ছালাম চৌধুরী 

সঙ্গীত,দেহের সাথে মনের মিলন ঘটায়। পৃথিবীতে যত মানুষ আছে তারা প্রত্যেকেই সঙ্গীত প্রিয় হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই বুঝেও তা বুঝি না, নানাজন নানা কথা বলে ফেলে বুঝি সে বোধহয় সঙ্গীত চর্চা করে না। 

কিন্তু না 

প্রত্যেক মানুষই ভেতরে ভেতরে নিজের মত করে সঙ্গীতটাকে লালন করে। সময়ে অসময়ে একা একা সে গায়। এতে করে তার আত্মা শিশুদের মতো কোমল হয়। ক্ষানিকটা হলেও আনন্দ পায়।

এখানে এসে আমরা যদি ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির কথা ধরি, তাহলেও ইসলামিক সংগীত তথা বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় সঙ্গীত আছে যেকোনো মানুষের জীবনে একবার হলেও সেই সকল সঙ্গীত চর্চা করেছেন। ধর্মীয় অনুভূতি গুলো হৃদয়ে গেঁথে নিয়ে সারাজীবন কাটিয়েছেন। এবং বলা চলে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। 

সংগীতচর্চায় সাধারণত শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা নেই। উপমহাদেশে এমন অনেক সংগীতশিল্পী আছেন, যাদের কোন অক্ষর জ্ঞান নেই। যারা পড়তে পারে না, লিখতে পারে না, কিন্তু তারা অসংখ্য গান মুখে মুখে রচনা করে গেছেন। তারা আজও ইতিহাসে কালের সাক্ষী হয়ে আছেন। 

সঙ্গীত মূলত মনটাকে প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে।

মনের সাথে প্রত্যেকটি অঙ্গের একটা মিল আছে একটা কানেক্টিভিটি আছে, বা যোগাযোগ আছে। 

আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করি কাজের ফাঁকে ফাঁকে অনেকেই গান শুনেন। গান শুনতে শুনতে যে আনন্দ জাগে সে আনন্দ তার কাজের চাপটা হ্রাস করে, ব্যথা ভুলতে সহায়ক হয়। 

সঙ্গীত মানুষের জীবন মান উন্নত করে। প্রত্যেকটি মানুষের মনে কখনো না কখনো সঙ্গীতের স্ফুরণ বেজে ওঠে। যাকে আমরা প্রাথমিকভাবে সঙ্গীত বলে ধরে নেই। 

আমাদের জীবনে এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা কৃষি কাজ করেন এবং একই সাথে গান করেন। অর্থাৎ তাঁর মনের প্রফুল্লতা ফিরে পেতে গানটা প্রধান সহকারী হয়ে উঠে। সেই একই কৃষক সন্ধ্যা পরে বাড়ি বাড়ি বসে জারি সারি গান গায়। এতে করে আত্মার সাথে মিলন ঘটায়। চিত্ত প্রফুল্ল করতে সহায়তা করে। 

চিত্তের সাথে শরীর, দেহ পরোক্ষভাবে জড়িত। আর এখানেই এসে, সঙ্গীত আর প্রাণের বারবার মিলন ঘটায়। দেশপ্রেমের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। দুঃখ ভারাক্রান্ত মনকে ও একমাত্র সঙ্গীত থেরাপি হিসাবে কাজ করে। 

যারা সঙ্গীত চর্চা করে, তাদের নিত্য দিনের আত্মার খোরাক এই সঙ্গীত। সবমিলিয়ে সঙ্গীত মন মেজাজের ঘনিষ্ঠ সহচর, বন্ধু।