সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক এর গুচ্ছ কবিতা

সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক এর গুচ্ছ কবিতা

চাপ
সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক

বল্লম নিয়ে ধেয়ে আসে দামাল বাতা,
বাতাসীর বীভৎস অনুভবে জাগে
স্নায়ুর সারা ঘরে শুধুই হাঁসফাঁ !
বর্দ্ধমানক্রমবর্দ্ধমান দস্যিপনায়
বুঝতে পারিখুলছে খুলছে সেই ঢা,
যেখান থেকে বাড়ালেই মুখ বুঝি ঠি,
কিম্ভূত-কিমাকার অসহ জীবটি আবার
সত্তার দখল নিতে বাড়াচ্ছে চাপ |

হলোটা কি ? কি হলো রে বটে ?
বিশমণী উপলের ভারে জগতটা লাগে ড়বড়ে,
ভূ-কম্পের আদুরে প্রহারে মগজের সীমানায় 
কারা যেন দিচ্ছে ঝাঁপ ?
দাপটের ফুরফুরে মেজাজের তীব্র শোষণে
বত্রিশ পাটির দেঁতো ঝলকে দেখি খুশীতে ডগমগ
চাপআসছে রে ছুটে চাপ |

ওমন জানোয়ার জীবনভর গ্যাস-কক্ষে
ঠেলেঠুলে যথা-তথা দেয় চুম্বন-ভা !
তামাম পরিবেশে তখন খুঁজি জহরব্রতর নব্য ধারণা
লেলিহান শিখার পেটে শয়তানটা দিক না মরণঝাঁপ!
ঝাঁপ রে ঝাঁপ !
তেমন ঝটিকায় নামবেই শান্তিথাকবে না কুশ্রী তাড়না,
বাঁচব রে সুস্থতায়বাঁচব রে মগ্নতায়,
ফুৎকারে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলাম
নামগোত্রহীন জমাট বদ্ধ চাপটা |
বাপরে বাপবাপরে বাপ!বাপরে বাপ !
নাইরে নাইরে জানি নিস্তার এমনতর দংশনে,
ডেরায় যেন সানন্দে নাচেই অচেনা কালসাপ |

ভাইরাল

সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক

কুরে কুরে খায় বিষাদ-কাঁপন নিজে মনে!
ছেয়ে থাকে মনমরা আবহ বিষন্নতার
বিস্তীর্ন এলাকায় জাপটাজাপটি করে |
চক্রব্যূহে বন্দী সময় ছড়িয়ে পড়ে মূহুর্তে
পাঁচ-পাঁচজনার বঙ্কিম নজরে,
তখুনি জলবৎ তরলম্-আর থাকেই না ড়াল,
আসলে ঘটনাটি চুপিসারে হয়েছে ভাইরাল |

নিমগ্ন বকের ধ্যানে খেলা করে সাপদের ফণা !
জড়সড় ভয়ের মজলিশে বাক্-শূন্য বধিরতা
নিমেষে জড়ায় প্রণয়ীর মতন |
আবেশে নিবেশে মদিরতার নগ্ন মাতনে
মুহূর্তরা ডুবে যায় যখন-তখন,
তবুও রহস্য নীরবতা কখনো-সখনো
হয়ে ওঠে দাপুটে মাতাল,
আসলে নাটকটি অবশেষে হলোই যে ভাইরাল !

অথচ ইচ্ছাগুলো থাকুক না চাপা আত্মগোপনে !
ভাবতেও চাই নাআশেপাশে ভাইরাসে থাবায়
নখদন্তের রয়েছে কতটা শাসানি ?
ভাবলেও জাগে ভয়অর্ন্তজালে যদি পাখা মেলে
জমাটি রসিকের জমাট কাহানী !
হামাগুড়িতে তবু কার পায়ের শব্দ শুনি ?
আগুনে তাপনে ঝলসায় ওমন হালচাল,
বেচাল  খবরটা হতেও পারে যে ভাইরাল |

শূন্যে,তারপর উত্থানে
সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক

এভাবে হারিয়ে যাওয়ার অন্ধকারে শূন্যতার ঘোরতর আলোড়ন
পিছমোড়ায় ফেলল বেঁধে গোপন অভিসারে |
যেন চুরির দায়ে পড়লাম ধরা ‘আসামী’ শিরোনামে,
যেন পরিহাস হাত দুটি তুলে ধুঁয়ো দিল চারপাশে,
তখন তুমি-আমি কান্নার সাথেই গড়ি সহজ সখ্যতা,
এমন ভালবাসায় শূন্যতার দহরম-মহরমে নজরের দু-চোখে
নোনা জল পাকাপাকি ভিড়েছে বন্দরে |

নেই নেই আবেগের কোনো বিনোদন-ভাষা,
অনুভবের দোনোমনা বিচরণে গল্পের গরুও
কখনো-সখনো গাছেতে চড়ে,
নেই নেই পথিকের স্বাভাবিক চলনবল,
আলুনির ছায়া-ছায়া সঙ্গী চেতনায় যখন-তখন
বিষন্নতাই কামড়ে ধরে |

শূন্যের জবরদখলে একা-একা কোণঠাসা অনুমানে
বোকা-সোকা ভাবগুলোই গড়ল ভব্যতা |
আগল ভেঙ্গে এগোনোর কালে দু-হাত বাড়াও ভালবাসা
নেই নেই ঘেরাটোপে উঁকিও দিতে পারে সম্ভাবনা,
আমার থেকে আমিকে যদি তুলে দিই তোমার করে,
ভাঙচুরের শুরু হতেও পারে তখুনি দামামা-বাদ্যে---
ভেঙ্গে-টেঙ্গে আমার-তোমার আদলখানি ঢাকবে তৃপ্তির কায়া |