২৮ অক্টোবর ঘিরে চলছে উত্তেজনা, হুঙ্কা পাল্টা হুঙ্কার

বাংলাভাষী ডেস্ক::

২৮ অক্টোবরকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে চরম উত্তেজনা। হুঙ্কার, পাল্টা হুঙ্কারে কাঁপছে দেশ। ওই দিন মাঠের বিরোধী দলসহ এক দফা দাবির আন্দোলনের সমমনা দলগুলো মহাসমাবেশ ডেকেছে। বিএনপির মহাসচিব ঘোষণা দিয়েছেন ‘ওই দিন জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ে আন্দোলনের মহাযাত্রা শুরু হবে’। বিএনপি মহাসচিবের এ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পাল্টা ঘোষণা দিয়েছে, ‘ওই দিন তাদেরও মহাযাত্রা শুরু হবে, বিএনপি ঢাকা অবরোধের চেষ্টা করলে পাল্টা আওয়ামী লীগও অবরোধ করবে, বিরোধী দলকে বসতেই দেয়া হবে না।’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় (তাদের ভাষায়) তারাও প্রস্তুত।

আগামী ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশের বিষয়টি অবহিত করে ইতোমধ্যে ডিএমপিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। সমাবেশ সফলে নেয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতিটি সাংগঠনিক জেলা থেকে নেতা-কর্মীদের ঢাকা আনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সিনিয়র নেতারা প্রতিদিনই বৈঠক করছেন। গুলশান কার্যালয়ে বিভাগওয়ারি বৈঠক শুরু হয়েছে। নিজ নিজ জেলায় নেতারা প্রস্তুতি মিটিং করছেন। বিএনপি নেতারা বলেছেন, সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশে নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বসে পড়বে বলে ক্ষমতাসীনরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। এটা একেবারেই একটা অপপ্রচার।

তিনি বলেছেন, আমরা আমাদের দলের কোনো নেতা-কর্মীকে ঢাকায় এসে বসে পড়তে বলিইনি। আমরা বলেছি, ২৮ তারিখের কর্মসূচির পরে যে যার জায়গায় চলে যাবে এবং আমাদের পরবর্তী কর্মসূচির জন্য তারা অপেক্ষা করবে। ইটস ক্লিয়ার। আমরা ২৮ তারিখে এমন কোনো কর্মসূচি দেবো না যে, তারা ঢাকায় বসে থাকবে।

এদিকে, রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে আবারো রাজনীতিতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। সরকার পতন আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপের কর্মসূচি হিসেবে আগামী ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ওই দিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগও পাল্টা সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ শিরোনামে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য ডিএমপি কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছে শাসক দল।

দলটির নেতারা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস তিনেক বাকি আছে। আগামী মাসে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথাও বলেছে। কিন্তু নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার জন্য একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। তারা ওই দিন রাজধানী ঢাকা অচল করে দেবে- এমন তথ্যও আছে। কিন্তু সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তো ঘরে বসে থাকতে পারে না। ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের নেতাকর্মীদের সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে। ২৮ অক্টোবর ঘিরেও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নেবেন। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট সচিবালয়, পুরানা পল্টন মোড়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউসহ আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন।

ওই দিন সমাবেশে জনসমুদ্রে পরিণত করার জন্য জোরালো প্রস্তুতি নিয়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কঠোর পরিশ্রম করছেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও সেই প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ২৮ তারিখ আওয়ামী লীগেরও মহাযাত্রা রয়েছে। ২৮ তারিখ বিকেলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের সমাবেশে জনসমুদ্র হবে।