সিলেটের ৬টি সংসদীয় আসনে বিএনপি নেতারা তৎপর

সিলেটের ৬টি সংসদীয় আসনে বিএনপি নেতারা তৎপর

বাংলাভাষী ডেস্ক :

সিলেটের ৬টি সংসদীয় আসনে মাঠ দখলে মাঠে নেমেছেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক নেতা। যারা মাঠে ছিেেলন তাদের বাইরেও অনেকে শুরু করেছেন নানা মুখি তৎপরতা। হাই কমান্ডের ‘ইশারা’য় কাজ করছেন অনেকেই। বিশেষ করে প্রবাসী নেতাদের যঙারা দেমে আসতে পারেননি, বিদেশে থেকে ভ‚মিকা রেখেছেন তারাও একের পর এক পা রাখছেন দেশের মাটিতে। জানান দিচ্ছেন নিজেদের শক্তি সামর্থ আর প্রভাব প্রতিপত্তি। ফলে আগামী জাতীয় সংসদে কে বা কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন তা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরণের ধোঁয়াশা তৈরী হয়েছে।
গত সংসদ নির্বাচনে সিলেট জেলার সংসদীয় আসন গুলোর মধ্যে ৬টিতে বিএনপির কেউ অংশ নেননি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এককভাবে এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে জোটগতভাবে বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচন করেন। তবে সিলেটের ৬টি আসনের কোনটিতেই ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপির কেউ। এ নির্বাচনও বয়কট করে বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিলেট ১ (সদর) আসনে বিএনপি চেয়ারপার্র্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির. সিলেট ২ (বালাগঞ্জ-বিশ^নাথ) আসনে গণফোরামের মোকাব্বির খান, সিলেট-৩ ( দক্ষিণ সুরমা -ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনে শফি আহমদ চৌধুরী, সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর-গোয়াইঘাট-কোম্পানীগঞ্জ) আসনে দিলদার হোসেন সেলিম, সিলেট ৫ আসনে জমিয়তের মাওলানা ওবায়ুদল্লাহ ফারুক, সিলেট ৬ আসনে বিএনপির ফয়সল আহমদ চৌধুরী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। সে নির্বাচন জোটগতভাবে হওয়ায় সিলেটের এ ৬টি আসনে বিএনপি শরীকদের জন্য দুটি আসন ছেড়ে দেয়। এর একটি সিলেট-২ এবং অপরটি সিলেট-৫ আসন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। সে নির্বাচন বয়কট করেছিলো বিএনপি। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে সিলেটের সবকটি আসনেই প্রার্থী দেয় বিএনপি। বিশেষ করে সিলেট জেলার ৬ টি আসনের মধ্যে সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন এম ইলিয়াস আলী, সিলেট-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধূরী, সিলেট ৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বিএনপির নেতা দিলদার হোসেন সেলিম এবং সিলেট ৫ এবং ৬ আসন বিএনপি তাদের শরীক জামায়াত প্রার্থীদের জন্য ছেড়ে দেয়।
এবারের নির্বাচন অর্থাৎ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি এককভাবেই করতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। আর যদি এমনটি ঘটে তাহলে সিলেটের ৬টি আসনেই নিজস্ব প্রার্থী থাকবে বিএনপির। ফলে অতীতের প্রার্থীদের কোন হিসেবই কাজে আসছেনা এবারের নির্বাচনে। আগামীতে নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে অনেকটা সতর্ক থাকবে বিএনপি- এমনটি জানা গেছে দলীয় সূত্রে। এ পর্যন্ত যারা সিলেটের ৬টি আসনে মাঠ ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে সিলেট-১ আসনে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির,এই আসনে এম এ খানের মেয়ে জোবায়দা রহমানের নামও কেউ কেউ নিচ্ছেন। সিলেট-২ আসনে ইলিয়াস পতœী তাহসিনা রুশদীর লুনা, সিলেট-৩ আসনে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, আলী আহমদ, সিলেট ৪ আসনে কোনো প্রার্থী প্রচারণা না চালালেও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধূরী এ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করতে পারেন এমনটি গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া ব্যভারিস্টার সায়েমের নামেও প্রচারণা চলছে। তিনি ঐ নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন সভা সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। সিলেট ৫ আসনে প্রয়াত হারিস চৌধুরীর কন্যা সামিরা তানজিন চৌধুরী, চাকসুর সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন, ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, সাবেক উপজেলা চেযারম্যান আশিক চৌধূরী প্রচারণা চালাচ্ছেন। সিলেট ৬ আসনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ফয়সল আহমদ চৌধূরী বিএনপি সমর্থিত প্রতিদ্ধন্ধিতা করলেও এবার সেখানে আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, এমরান আহমদ চৌধুরী ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। তারেক রহমানের উপদেষ্টা টাওয়ার হ্যামলেটস এর সাবেক ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর ওহিদ আহমদ। তবে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে মাঠে তৎপর নেতাদের বাইরেও কাউকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। আর এমনটি ঘটলে সেখানে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।
এদিকে সিলেট জেলায় বিএনপির প্রার্থীদের তৎপরতা এবং মনোনয়ন প্রসঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক মিফতাহ সিদ্দিকী এ প্রতিবেদককে বলেন, সিলেটের সবকটি আমাদের একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তারা স্ব এলাকায় কাজ করছেন। এর মাধ্যমে আমাদের দল তৃণমূলে আরো শক্তিশালী হচ্ছে। আর মনোনয়নের বিষয়টি দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে হবে। সেখানে আমাদের সকলের চেষ্টা থাকবে গ্রহণযোগ্য প্রার্তীকে মনোনয়ন দেয়া। যাতে বিজয় নিশ্চিত হয়। আমি আশাবাদী আগামী নির্বাচনে সিলেট জেলার ৬টি আসনেই বিএনপির প্রার্থীরা জয়লাভ করবে।
সিলেটের ৬টি আসনের প্রার্থীদের তৎপরতা নিয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধূরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মনোনয়ন বড় কথা নয়। এখন দলকে গোছাতে সবখানে কাজ করছেন আমাদের নেতৃবৃন্দ। এক বা একাধিক নেতা কাজ করতে পারেন। সেটি দলের জন্য। আর দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই থাকবে নেতাকর্মীরা। কারণ দল সময় মতো একজনকেই বেছে নেবে।