তবুও হোক ভালোবাসার চাষবাস

তবুও হোক ভালোবাসার চাষবাস

- গোলাম রববানী

শুনেছি তুমি আজ বড্ড বেশি রাত করে ঘুমচ্ছ 

খামখেয়ালি এদিক সেদিক ইচ্ছে মতো ডানা মেলাচ্ছ

রাত-বিরেতে নতুন নতুন নম্বরে ডায়াল কলে 

কলের বিশাল লিস্টে আকাশ ছুঁয়ে ফুঁড়ে দিচ্ছে 

এত্তো এত্তো কথায় কথার ফুলঝুরি হচ্ছে

মেঘ কথাসাগরে কথার অঝোরধারার কথাবৃষ্টি হচ্ছে

শুনেছি সে-তো মুষলধারার মতো কথাবৃষ্টি হচ্ছে

প্রশান্ত মহাসাগর আর অশান্ত মন ভাসছে 

সেদিকে কী কেউ খেয়াল রাখছে, 

হয়তো আর প্রয়োজন নেই তাইতো কার মন পুড়ছে!

শুনেছি সে আজ বড্ড বেশি বাহারী পরী সাজছে

সাজুগুজু করে আবালবৃদ্ধবনিতার মাথা খাচ্ছে!

শোবিজের পরীমনির মতো 

অতোটা আলোচিত-সমালোচিত হতে এখনো পারিনি 

চায়ের কাপে কিংবা পানতা ভাত গিলতে গিলতে

অথবা নামীদামী কোনো রেস্তোরাঁতে

কিংবা হোটেল মোটেলে,রেস্টুরেন্টে, পার্কে পার্কে,

সাগরজলে অথবা শূন্যতে ভাসতে ভাসতে

অথবা আবাসিক অনাবাসিক সব শুভ্রবসনে

বিলাসবহুল গাড়িতে, বাড়িতে আরাম আয়েশ করতে

করতে অনায়াসে বলছে না 

সত্যিই তেমন কেউ কিছু বলছে না

ছাপান্ন হাজার বর্গমাইল ছাড়িয়ে বিশ্বচরাচরে

সাক্ষী আছে সবুজ অরণ্যের বিছানো সবুজ জাজিমে

আরো সাক্ষী শিল্প কলকারখানার গ্যাঁজানো সুতে

আরো সাক্ষী আছে ইলেক্ট্রিসিটির বাতাস

দেয়াল থেকে দেয়ালের বদ্ধ চৌদেয়ালে

কিংবা খোলা ময়দানের সমস্ত গিরি-খাত,সাগর-নদে

যদি বন্দোবস্ত হতো শাসন প্রশানের আদানপ্রদানে

তবে নিশ্চিত বাংলার আনাচে-কানাচে থেকে

বেরিয়ে আসতো লাল-নীল,সবুজ-হলুদ বামুনে, 

শরীর-অশরীরীরে যেইসব জিন্দিগির রঙিলা গল্পে

কবিদের মতো এত্তো স্বচ্ছ আলো পৃথিবীতে 

আলোর কথা প্রথম আলোর কথা কেউ কি বলেছে?

কবিদের কথা শাণিত তরবারির চেয়েও ধারালো 

তাদের বলা তারা বলেছে কেউ কি তা কখনো অক্ষরে অক্ষরে মেনেছে, না কখনো তা শুনেছে?

শুনেছি ফেলে আসা দিনগুলি তার মনে নেই

আহারে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি দিনগুলি মনে নেই

ক্যামন করে-ই বা মনে থাকবে

শুনেছি কামনার নেশায় কামুকে দেহ গড়েছে

অট্টালিকা গড়েছে, সুইচ ব্যাংকেও একাউন্ট হয়েছে

আবাসন প্রকল্পে, রিয়েলিটি প্রোজেক্টে নাম গেছে

ক্যামন করে ফেলে আসা দিনগুলি মনে থাকবে

কিসের জন্যে আর পেছনের দিনগুলি মনে আনবে?

হয়তো এখন আর ঘুমের ডিস্টার্ব হয় না

খানাপিনায় কোনো ঝামেলা আসে না

কাজের বেলায় আর কেউ বিরক্ত করে না

হয়তো বুকের ভেতর আর চিনচিনও করে না

ব্রেইনে ব্রেইনে মাইগ্রেনের অতোটা ব্যথা আসে না

চোখের দেখা না পেলেও আর বুক ধড়পড় করে না

বুঝেছি সেই পিরিতের বড় পিরীত ছিলো না

না ছিলো প্রেম 

না ছিলো ভালোবাসা

আর না ছিলো মায়ামমতা

যা ছিলো তার সবটুকু-ই ছিলো ছলনা

যা ছিলো তার সবটুকুই ছিলো স্বার্থপরতা

তবুও তোমরা চাষাবাদ করো ভালোবাসার চাষাবাদ!