প্রবাসী পিতা-পুত্রের মৃত্যু: এখনও অনুদঘাটিত রহস্য

প্রবাসী পিতা-পুত্রের মৃত্যু: এখনও অনুদঘাটিত রহস্য

বাংলাভাষী ডেস্কঃঃ

সিলেটের ওসমানীনগরে প্রবাসী পরিবারের পিতা-পুত্রের মৃত্যু ও অন্য তিন সদস্য অসুস্থ হওয়ার ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও কোন ক্লু উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। ফলে কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা এখনও রহস্যাবৃত্ত।

মঙ্গলবার অচেতন অবস্থায় ৫ প্রবাসীকে তাজপুর এলাকার ভাড়াটিয়া বাসা থেকে উদ্ধারের পর নিহত যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলামের শ্যালক দিলোয়ার তার স্ত্রী শোভা বেগম এবং ভাই সেবুল সহ একাধিক ব্যক্তিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি তবে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন পিপিএম জনিয়েছে ঘটনার ক্লু উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত থানা ইউডি মামলা হবে। ক্লু উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে পাওয়া গেলে পরবর্তীতে হত্যা মামলা নেয়া হবে।

নিহত প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মাইকুল ইসলাম নিহত এবং পরিবারের অন্য তিন সদস্য বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার খবর পেয়ে নিহতের দুই ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম, বিজেকুল ইসলাম, বোন শাহীনা বেগম ও মা জরিনা বেগম বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন। বুধবার বিকেলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত পিতা পুত্রের ময়না তদন্ত শেষে লাশ দুটি নিহতের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। নিহতদের লাশ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার দয়ামীর ইউপির বড় ধিরারাই গ্রামের তাদের পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন।

এদিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ এ ভর্তি নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুসনেআরা বেগম ও ছেলে সাদিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থা ভাল রয়েছে তবে নিহত রফিকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে সামিরা ইসলামের অবস্থা আশংকাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বুধবার দুপুর ১টার দিকে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন পিপিএম তাজপুর স্কুল রোডে ঘটনাস্থলের বাসা পরিদর্শন করেন। এ সময় ডিআইজির সাথে ছিলেন, সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমানীনগর সার্কেল রফিকুল ইসলাম ও ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন।

সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন পিপিএম বলেন, পুলিশ বিভিন্ন বিষয় মাথা নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। পরিবারের ভেতর থেকে কেউ বিষ প্রয়োগ করেছে নাকি বাহিরে থেকে কেউ বিষ প্রয়োগ করেছে সে বিষয়টি আমরা গুরত্ব দিয়ে দেখছি। এখন পর্যন্ত জানার মতো বড় ধরণের কোনো তদন্তের অগ্রগতি নেই। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজনের মধ্যে দুইজনের অবস্থা ভাল আছে নিহতের একমাত্র মেয়ে সামিরার অবস্থা সংকটাপন্ন।

নিহত রফিকুলের শ্বশুর আনফর আলী বলেন, ঘটনার দিন আমার মেয়ে জামাই বাজার থেকে বার্গারসহ বিভিন্ন ধরণে ফাস্টফুড কিনে আনেন। রাতে তারা পরিবারের সবাই ফাস্টফুড খেয়ে ১০টার দিকে একই কক্ষে সবাই ঘুমিয়ে পরেন। সকালে ডাকাডাকি করে না উঠায় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ দরজা ভেঙ্গে অচেতন অবস্থায় ৫জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার আমার মেয়ে জামাই রফিকুল ও নাতি মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করে। আমি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও এর বিচার চাই।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সিলেটের ওসমানীনগরে তাজপুর স্কুল রোডরে একটি বাসা থেকে এক পরিবারের ৫ যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। হাসপাতালে নেয়ার পর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের ধিরারাই (খাতিপুর) গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার ছোট ছেলে মাইকুল ইসলাম (১৬) মারা যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) এবং মেয়ে সামিরা ইসলামকে (২০) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

বর্তমানে নিহতরে স্ত্রী হুসনেআরা ও ছেলে সাদিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থা ভাল রয়েছে তবে তার একমাত্র মেয়ে সামিরা বেগমের অবস্থা আশংকাজন রয়েছে।