লন্ডন বাংলা স্কুলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

লন্ডন বাংলা স্কুলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

আনোয়ার শাহজাহান 


গত ২৪ ফেব্রুয়ারি, শনিবার লন্ডন বাংলা স্কুলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এই প্রতিযোগিতায় বিলেতবাসী বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।

লন্ডন বাংলা স্কুলের চেয়ারম্যান আনোয়ার শাহজাহানের সভাপতিত্বে এবং জেনারেল সেক্রেটারি তারেক রহমান ছানুর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন সোশ্যাল ট্রাস্টের মেম্বারশিপ সেক্রেটারি আমির হোসেন। এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার কাউন্সিলর জাহেদ চৌধুরী, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডিপুটি মেয়র ও কেবিনেট মেম্বার ফর এডুকেশন কাউন্সিলর মায়ুম তালুকদার, নিউহ্যাম কাউন্সিলের মেয়র কাউন্সিলর রহিমা রহমান, বার্কিং ও ডেগেনহাম কাউন্সিলের মেয়র কাউন্সিলর ডোনা লুমসডেন। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, লন্ডন বাংলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক তছউর আলী, রেডব্রিজ কাউন্সিলের কাউন্সিলর ফয়জুর রহমান, বাংলা স্কুলের শিক্ষক প্রফেসর মিছবা কামাল, গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বোর্ড মেম্বার রুহুল আমিন রুহেল, গোলাপগঞ্জ উপজেলা এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুল বাছির প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে লন্ডন বাংলা স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষে বক্তব্য রাখেন, ভাইস চেয়ারম্যান সালেহ আহমদ, সোশ্যাল ট্রাস্টের ট্রেজারার সাইফুল ইসলাম, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান, এডুকেশন সেক্রেটারি আব্দুল বাছিত, স্পোর্টস সেক্রেটারি কবির আহমদ, বোর্ড মেম্বার মাহমুদুর রহমান শানুর, ইসি মেম্বার নজরুল ইসলাম, ইসি মেম্বার মুহিবুল হক, বোর্ড মেম্বার মোস্তাক আহমদ হেলাল, ইসি মেম্বার মোহাম্মদ শামীম আহমদ, বাংলা স্কুলের শিক্ষক নুসরাত আহমেদ, রুজি বেগম প্রমুখ।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার কাউন্সিলর জাহেদ চৌধুরী বলেন, "লন্ডন বাংলা স্কুল আমাদের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের একটি প্রতিষ্ঠান। আমি এর প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যোক্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর মায়ুম তালুকদার বলেন, "প্রবাসে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম প্রিয় মাতৃভাষা বাংলা যাতে চর্চা করতে পারে, সে জন্য লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী একটি উদ্যোগ। আমি আশা করব, আপনাদের সবার সহযোগিতায় এই প্রতিষ্ঠান তার লক্ষ্য অর্জনে সফলতার সাথে এগিয়ে যাবে।”

 
নিউহ্যাম কাউন্সিলের মেয়র কাউন্সিলর রহিমা রহমান বলেন, "মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের তরুণেরা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই দিনেই আমাদের একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের ভিত্তি রচিত হয়েছিল। লন্ডন বাংলা স্কুলের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সব শিশু এবং তাদের অভিভাকদের জানাই শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা।”

বার্কিং ও ডেগেনহাম কাউন্সিলের মেয়র কাউন্সিলর ডোনা লুমসডেন বলেন, প্রবাসে মাতৃভাষা চর্চাকে আরও সূদৃঢ় করতে এবং মাতৃভূমির সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের সেতুবন্ধন তৈরি করতে নিজের ভাষা শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানান।


 

লন্ডন বাংলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক তছউর আলী শহিদ দিবসের প্রেক্ষাপটে উপস্থিত সবার প্রতি স্বাধীনতার মর্ম উপলব্ধি এবং সমাজের সমস্ত ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা মুছে শহিদদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার শপথ নেয়ার আহ্বান জানান।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আনোয়ার শাহজাহান বলেন, “লন্ডনে বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। আমরা সর্বোতভাবে চেষ্টা করছি বিদেশি ভাষা ও সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা আমাদের নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষাশিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেয়ার।”

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক হাসান হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক এনাম চৌধুরী, কবি লুৎফুন নাহার, কবি আমির খসরু, কমিউনিটি সংগঠক সুয়েজ মিয়া প্রমুখ।


চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ‘এ গ্রুপ’ এবং ১১ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ‘বি গ্রুপে’ মোট ৪৮ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এতে এ গ্রুপে প্রথম তায়িবা চৌধুরী, দ্বিতীয় আনিতা এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে জুবাযেদ। বি গ্রুপে প্রথম আজহার হোসেন, দ্বিতীয় আয়মানেত রাহা এবং তৃতীয় হয়েছে তায়্যিবা শাহজাহান।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে লন্ডন বাংলা স্কুলের শিক্ষার্থী হৃদ্য রহমান ও হৃষিত রহমান। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে আয়োজিত আবৃত্তি, হাতের সুন্দর লেখা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। 

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা চাঁন মিয়া পাইনাপেল গার্ডেন, ঢাকাদক্ষিণ এর সৌজন্যে অনুষ্ঠিত হয়।