আমিত্বের আমি
নাছিমা মিশু
আমি তো পারিনি আমাকে বুঝতে
আমাকেই আমি পারিনি করিতে নিশ্চিত
তবে বলো কোন দোষে তোমাকে করিব দোষী
আপন বেড়াজাল কৃত নৈসর্গিক অ-সৌন্দর্য ধারণে-
যে আমি নিজে ই বাহির হতে পারিনি আজও
তোমাকে বলি কী করে বেড়িয়ে আস
এ যুগ শিক্ষার আধুনিকায়নে আমার শিক্ষা বহুত পশ্চাৎপদ
বহুত পশ্চাৎপদ নয় ; অনাদি কালের সংস্কার আষ্টেপৃষ্টে
আমাতে বাঁধা
আমি যুগ নব পরিক্রমায় আদতে পুরাতনেই আছি পড়ে
আমি দখিনা মলয়ে আবেগ ঝিরিঝিরি বহতা তটিনী
আমি শুষ্ক আকুতি ময়ূরী বেশে কাক রুপে হতে পারিনি
মধুকন্ঠী কোকিল
আমি আমাতে হারাতে প্রকটিত নই;আজও লুকাই মুদিত নয়নে
না দেখা নয়,দেখার পেছনে দেখায় আমি এখনো নীরব সাক্ষ্য
অতল টলমল তৃষিত তৃষ্ণায় আবেশ তাড়িত আমি
আজও পারিনি ডুবে যেতে যে ছবির প্রতিচ্ছবি আমার নয়ন দেখে চলেছে
আমি পারিনি আমার আমিত্বের সংস্কারকে অতিক্রম করতে
আমি যুগের নই,নই আধুনিক ঢঙে প্রাচীনের ঝংকার
আমি পশ্চাৎপদ পথের বাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা এক অনাথ প্রেম তিয়াসী প্রেম
আমি উজাড় হই নিঃসঙ্গ নিশুতি রাত, গভীর তমসা, অনন্ত অসীমের মাঝে
আমি কুড়াই বকুল, ঝরে পড়া শিউলি যত দলিত মথিত অবহেলিতদের
আমি আড়ষ্ট, ভীরু, ভীতু, ভীষণ ভীতু
আমার আমাকে আমি প্রাচীর ঘেরা এক অদৃশ্য অস্পৃশ্য ভাবের ঘরে করেছি কয়েদ
আমি সত্যাসত্য অপারগ এ নব যুগের তালে তাল মিলিয়ে চলতে।