বাংলাভাষীর ৭ম জন্মদিন এবং অনলাইন বাস্তবতা
মো: ফয়ছল আলম:
প্রায় ৬ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিলো বাংলাভাষী। নিরেট একটি অনলাইন পোর্টাল হিসেবে। আশা স্বপ্ন সবই ছিলো উদ্যোক্তাদের। বিশেষ করে এর সম্পাদক মো: ওলিউর রহমান খানের কথাই। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে যে আশা স্বপ্ন থাকে সে রকমই। কোনো অংশেই কম নয়। চলতে চলতে ৭ম বর্ষে পা রেখেছে যুক্তরাজ্য থেকে পরিচালিত এই দৈনিকটি। প্রত্যাশার দিগন্তে কতটুকু পথ মাড়াতে সক্ষম বা ব্যর্থ সেটি বিচার করবেন এর সঙ্গে থাকা ১২হাজার পাঠক। যেখানে দুনিয়াজুড়ে হাজারো অনলাইন পোর্টাল রয়েছে, সেখানে এই ভিড়ে কি করলাম আমরা। একটু আত্মসমালোচনার সময় এসেছে। হুট করে পত্রিকা অনলাইনে ছেড়ে রাতারাাতি গুগল অ্যাডসেন্স পেয়ে যাওয়া, লাইকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া যখন স্বাভাবিক বিষয় তখন বাংলাভাষীর ক্ষেত্রে একটু কম কেনো। সেক্ষেত্রে আমি বলব যারাই আছেন বাংলাভাষীর সঙ্গে তারা সবাই রুচিশীল,দায়িত্ববোধসম্পন্ন মানুষ। যাদের চিন্তা চেতনায় দেশপ্রেম এবং রুচিবোধ রয়েছে। কারণ শুরু থেকেই বাংলাভাষী রগেরগে কিছু সংবাদ বর্জন করে আসছে। চটকদার শিরোনাম , ভেতরে শুড়শুড়ি জড়ানো শব্দ সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় চরম আপত্তিকর। এটি সকলেই জানেন। এ পেশার একটি নীতি নৈতিকতা, ও নীতিমালা রয়েছে। সংবাদের ধরণ,শব্দ চয়ন,বাক্য গঠন,শব্দ প্রয়োগ সবই করতে হয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। এরপরও ভুল থাকে,ভুল থাকবে। কিন্তু সতর্কও থাকতে হবে প্রহরীর মতো। সেই প্রহরীর ভূমিকা যিনি পালন করছেন তিনি হচ্ছেন ওলিউর রহমান খান। যার তীক্ষ্নবুদ্ধি, সুচিন্তার ফলে এ যাবৎ বাংলাভাষী কারও চরিত্রহানি ,মানহানি ঘটে সে পথে পা বাড়ায়নি। কোথাও সংবাদ নয়, বর্জ্য উপযোগী কিছু পরিবেশন হয়নি। পাঠক ধরার খাতিরে প্রথমে শিরোনাম দিয়ে আপলোড করে পরে দু:খ প্রকাশ বা মুছে ফেলতে হয়নি। বরং একটি অনলাইনে রুচিবোধ সম্পন্ন সাহিত্যমনা মানুষদের সম্পৃক্ততা বাড়ছেই। এটি বাংলাভাষীর জন্য আশা ব্যঞ্জক। আর সে আশার ঘরে প্রত্যাশার নতুন মাত্রা যোগ করলেন সিলেটের সূধীসমাজ।
পাঁচবছর আগে বাংলাভাষীর দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পনের অনুষ্ঠান হয়েছিলো দুইদিন ব্যাপী। সেখানে প্রথমদিন শারদা হলের পাশ থেকে যে শোভাযাত্রা বের হয়েছিলো সেখানে শরীক হয়েছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বর্তমানে দৈনিক সিলেট মিরর সম্পাদক আহমেদ নূর,সিকৃবির রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েবসহ সিলেট নগরের সূধীজন। পরদিন সিলেট সার্কিট হাউজে আয়োজিত কেক কাটার আয়োজনে মধ্যমণি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু,জেলা জাসদ সভাপতি লোকমান আহমদ,সিলেটের প্রতীতযশা সাংবাদিক মরহুম আজিজ আহমদ সেলিমসহ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ। লন্ডনেও বর্ষপূর্তির আয়োজনে এরকম সূধীজন উপস্থিত হয়েছেন একাধিকবার। সবার প্রত্যাশা বাংলাভাষী ভালো করছে,ভালো করবে। এবারের বর্ষপূর্তিতেও সেই প্রত্যাশা আরও বাড়লো। সংক্ষিপ্ত সময়ের আয়োজনে, সংক্ষিপ্ত পরিসরে সিলেটে কেক কেটে বষপূর্তির আয়োজন করা হয় গত ২২ ফেব্রুয়ারী। তাও রাত সাড়ে নয়টায়। যেখানে সিলেটে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে সকাল ১০টা ১১টায়,বিকেল তিনটা চারটায়,কিংবা সন্ধ্যা ৭টায়। সাড়ে নয়টা সময়টা অনেকের কাছে করোনাকালে- শীতের তীব্রতার এই সময়ে একটু বেমানানই মনে হলেও আমার কাছে উপায়ান্তর ছিলো না। কারণ একুশে ফেব্রুয়ারী বাংলাভাষীর জন্মদিন। যেদিন সিলেটে অজস্র অনুষ্ঠান ছিলো। সকলেই পরামর্শ দিলেন একদিন পিছিয়ে করতে। তাই করলাম। দিনভর সংশয় ছিলো রাত সাড়ে নয়টার অনুষ্ঠান আয়োজন বিফলে যায় কিনা?
না বিফলে যায়নি। সফল হয়েছে। হয়েছে প্রাণবন্ত। ভালোবাসার মানুষগুলো ঠিকই সঠিক সময়ে উপস্থিত হলেন। শুভাশীষ দিলেন। আশাবাদ ব্যক্ত করলেন বাংলাভাষী আরও ভালো করবে। সেদিন যার উপস্থিত হয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজনের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। এরা হলেন সিলেটের রাজনীতির অঙ্গনের সকলের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ জননেতা লোকমান আহমদ। যার পরিচিতি অনেক। জেলা জাসদের সভাপতি,কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক,সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির একাধিক বারের সাধারণ সম্পাদক তিনি। সিলেটের সাংবাদিক সমাজের কাছে বেশ সমাদৃত এই রাজনীতিক। আরেকজন সিলেটের সূধীসমাজের আপনজন,স্বজ্জন ব্যক্তিত্ব বদরুল ইসলাম শোয়েব। যিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র,চার চারবার নির্বাচিত কাউন্সিলর,নগরবাসীর প্রিয়মুখ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, শতাধিক বছরের স্মারক প্রতিষ্ঠান সিলেট প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি ও দৈনিক সিলেট বাণীর নির্বাহী সম্পাদক এম এ হান্নান,কলামিস্ট শমসের আহমদ সিলেট অঞ্চলের এক সময়ের আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছাত্রলীগ নেতা,ঢাকাদক্ষিণ ডিগ্রী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি শফিক উদ্দিন, সাবেক ছাত্র নেতা আব্দুল কুদ্দুস টিটু, সাংবাদিক এস এ শফি, কন্ঠশিল্পী এজাজ আহমদ শোয়েজ খান,খন্দকার শাহনুর হোসেনসহ সিলেটের সাংবাদিকতা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় কিছু ব্যক্তিবর্গ। যাদের কাছে বাংলাভাষীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
অনুষ্ঠানে সূধীজন বাংলাভাষীর জন্য শুভ কামনা করলেন, আয়োজনকে সাধুবাদ দিলেন আর আগামীর পথচলায় পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন। বিশেষ করে অনুষ্ঠানের মধ্যমনি প্রধান অতিথি জননেতা লোকমান আহমদ বাংলাভাষী পোর্টাল এবং এর সম্পাদক ওলিউর রহমান খান নিয়ে যে প্রেরণামূলক বক্তব্য রাখলেন তাতে প্রত্যাশার মাত্রা আরও বেড়ে গেলো। তিনি বললেন ওলিউর রহমান খান ছোটবেলা থেকেই সৃজনশীল,সৃষ্টিশীল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার অধিকারী। যার সম্পাদনায় পোর্টালটি তার লক্ষ্যপানে পৌছবে সেটিই প্রত্যাশা।
লেখক: সহযোগী সম্পাদক,বাংলাভাষী