একটি অসহায় মেয়ে

একটি অসহায় মেয়ে

রাজেশ কবিরাজ

আজ আর নয় রোমান্টিক প্রেমের কবিতা,

এবার না হয় একটু লিখি ওই -

সর্বহারা অনাথ ক্ষুধার্ত মেয়েটির আত্মকথা :

একটু না হয় ভাগ করে নিই 

তার অন্তরে জমে থাকা দীর্ঘ ব্যথা ।

সারাদিন হেঁটে চলে তপ্ত রোদে খালি পায়ে,

কখনো বসে থাকে স্টেশনে, -

কখনো বা দাঁড়িয়ে থাকে ফুটপাতে ।

চোখ দুটো তার ছল ছল করে,

কত ব্যাথা জমে আছে অন্তরে !

কেউ একটু কথা বলে না তার সাথে ।

কত মানুষ দেখে সে সারাদিন ধরে দু-চোখে,

একটু খাবার পেলে হাসি ফোটে তার মুখে ।

ক্ষুধার জ্বালা বুঝেছে সে জন্মের পরে,

যে বয়সে শিশুরা বেড়ে ওঠে 

মায়ের কোলে পরম আদরে ;

সেই বয়সে ঘুরেছে সে একটু খাবারের আসায় 

মানুষের দ্বারে দ্বারে মায়ের হাত ধরে ।

মা দেখিয়েছে তারে পৃথিবী খুবই ক্ষুধার্ত 

নিত্য এখানে মানুষ দেখে নিজের স্বার্থ ।

এখানে মূল্য নেই আমাদের মত গরীবের,

তাই এই পৃথিবীতে আসাটাই আমাদের ব্যর্থ ।

এসো মানুষ একসাথে তাই 

একটু মানবতার গান গাই ।

যেটুকু পারি তাই নিয়ে 

একটু তাদের দিকে ছুটে যাই ।

ব্যর্থতার ব্যথা দূর করে -

একটু ভালোবাসা দিই তাদের অন্তরে ;

যেটুকু পারি সাধ্য মত 

একটু খাবার দিই তাদের ঘরে ঘরে ।

আজ আর এখন থেকে 

না হোক কোন হিংসা বিদ্বেষ,

ওই ক্ষুধার্ত মেয়েটির দিকে তাকিয়ে 

সমস্ত রাগ অভিমান করি শেষ ।

মনুষ্যত্বের পরিচয় তাই দিয়ে যাই মরার আগে,

এ দেহ পবিত্র হোক তাদের পরশ লেগে ।