তোমার অপেক্ষায় (অণু গল্প )

   তোমার অপেক্ষায় (অণু গল্প )

----পারভীন আকতার

এই শোনছো?চোখ থেকে দীঘল চুলের কয়েকটি ফ্রেঞ্চ টোস্টের মতো আলগা করতেই যেন রোদের ঝিলিমিলি কড়া আভা অধরার গায়ে মুখমন্ডলে তীব্র আগুন ধরাতে ব্যস্ত।চুল উড়ছে দক্ষিণা হাওয়ার সাথে ছন্দে আনন্দে।সামনে নিলয় দাঁড়িয়ে অধরার চুলের খেলা দেখছে।
অধরার ডাকে হুশ ফিরলো যেন।
কী বল।আনমনে নিলয় ফাঁকা রমনার এক কোণের বেঞ্চিতে প্রকান্ড অবসাদ গুছাতে শরীর এলিয়ে দিল।পাশে অধরা।
এই ভর দুপুরে কেউ পার্কে আসে? কেন এত জরুরী তলব?অধরা ক্ষানিকটা রাগে একটু দূরেই নিজের অস্তিত্ব জানান দিল।
ওমা,দূরে সরছো কেন?কেউ নেই তো!কোন টহল পুলিশ আর চনাচুর বিক্রেতা নেই!দর্শনার্থীদেরও রোদ খেয়ে পার্ক ঘুরার ইচ্ছে নেই।নিলয় আশ্বাসবাণী দিয়ে অধরাকে পাশে বসায়।
তাই বলে এভাবে সমন জারি করবে?বাসা থেকে বের হওয়া এই সময় খুব সহজ ভেবেছো নাকি!ভাইয়া,ভাবি আর মা জিজ্ঞেস করছে, কোথায় যাবো।টুম্পা ভাগ্যিস এসেছিল তাই বের হতে পারলাম।অধরার এক নাগাড়ে কথায় যেন শেষ দাঁড়ি কমা নেই,বিরাম চিহ্ন খুঁজে পাচ্ছে না নিলয়।
থামো,থামো!এই নাও,পানি খাও।এবার দম ছাড়ো বাবা!সরি, কান ধরলাম।এমন আর হবে না।নিলয় প্রিয় অধরার পাশে বসে হাতে হাত রাখে।
বিশ্বাস করবে কি না জানি না,আজ মায়ের সাথে আমারও বেশ কড়া মেজাজে কথা হয়েছে। তোমাকে নিয়ে।নিলয়ের কথায় মনোযোগ দিতেই অধরা ভড়কে যায়।
কেন?আন্টি তো আমাকে পছন্দই করেন তাহলে আমাকে নিয়ে কী সমস্যা? অধরা নিলয়ের কথার মার প্যাঁচ বুঝে না।
না,মানে আমরা বিয়ে করব এটা বলাতেই রেগে আগুন মা।বল,তোমাকে ছাড়া আর থাকা যায়?নিলয় অসহায়ের মতো অধরার উত্তরের অপেক্ষায় চেয়ে থাকে।
কী বলছো?তুমি বেকার,পড়াশোনা শেষ হয় নি!তাছাড়া এই অবস্থায় আমার পরিবার কি আমাকে তোমায় দেবে ভেবেছো?বেকারদের কেউ পছন্দ করে না।তাছাড়া বাপের হোটেলে আজীবন খাওয়াও কি ঠিক বল!
অধরার কথায় নিলয় মুচড়ে গেল।
ওফ,তুমিও মায়ের মতো শুরু করলে?বিয়ের সাথে টাকা পয়সা,চাকরীর সম্পর্ক কী বল?বিয়েটা হলো মানসিক ও শারীরিক চাহিদা।দেখছো না এসব মানতে মানতে এক সময় ছেলে মেয়েরা খারাপ, অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।আমার চাহিদা এখন যা, তা পাঁচ বছর পর নাও থাকতে পারে।আবেগে ভুল পথে যাওয়া স্বাভাবিক।আমি এটা চাইছি না অধরা। বুঝার চেষ্টা করো।জন্ম -মৃত্যু, রিজিক সব একজনের হাতে।এতো ভেবে আগে ভাগে কী লাভ বল।
নিলয়ের আত্ম আহাজারি আর মনের কথা অধরার এখন খারাপ লাগছে না।সত্যিই তো বিয়ের সাথে বেকারত্ব সমস্যা সমাধান করা অনেক সময়ের ব্যাপার বটে!কিন্তু এই সমাজতো স্বাবলম্বী হয়েই বিয়ে,দায়িত্ব নিতে উৎসাহ দেয়।এমন অবস্থা যে পরিবারের দশজন সদস্য থাকলে খাওয়ানো পরানো সম্ভব কিন্তু একজন ছেলের বউকে খাওয়ানো অসম্ভব ব্যাপার হয়ে পড়ে!মূর্খ সমাজ!মনে মনে অধরা গালিই দিয়ে ফেলল।
নিলয় তোমার মা আর দশজন মানুষের মতোই ভাবছেন।এতে অপরাধের কিছু নেই।মাথা গরম করো না।আন্টিকে আমি বুঝিয়ে বলবো।আর আমার পরিবারকেও ম্যানেজ করতে হবে বুঝোতো!বড় ভাই ভাবীর উপর নির্ভরশীল আমরা। বাবা মা ঘরের বাইরে মানুষের মতো কদর হয়ে গেছে আজকাল।বড় ভাইয়ের হাতে সবকিছু।মা মাঝে মাঝে খুব কাঁদেন।আমি আশ্বাস দিই কিছু একটা করে দেখানোর।বলো,আমি কত যন্ত্রণায় আছি! অধরা ব্যাগ থেকে একটি খাম বের করে নিলয়ের হাতে দিয়ে বলল,এখন না।ঘরে গিয়ে খুলে দেখো।নিলয় অবাক!ওমা, অধরার হঠাৎ কী হলো!
এই আমি উঠছি,মা চিন্তা করবে।অধরা উঠতেই হাত ধরে টেনে বসিয়ে দেয় নিলয়।
তোমার গোলাপ নেবে না?এই নাও টাটকা গোলাপ!তোমার জন্য অধরা আমার।আমাকে টেনশনমুক্ত রাখো।তুমি পাশে থাকলে আমার কী আর পরীক্ষা বা বেকারত্ব? সব চমৎকার গুছিয়ে নেবো দেখো।শুধু পাশে তোমার মতো একজন মানবীয় প্রেয়সী দরকার।অধরার চুলের গোছায় দুটো গোলাপ গুঁজে দিয়ে নিলয় কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে।এবার যাও তবে।কাল ভার্সিটিতে দেখা হবে।অধরার মুখের দিকে তাকিয়ে কী যে ভাবে নিলয় সে নিজেও জানে না।
গোলগাল চেহারা,হরিণ শাবকের মতো হালকা নীল চোখের মনি,কেশের মসৃণ বিন্যাস,ভ্রুর চারপাশ পরিষ্কার খাঁচ কাটা, নাকের ডগা সরু, বিন্দু বিন্দু ঘাম,ঠোঁটের হালকা গোলাপী আভা রাঙায় মুচকি হাসি মায়াময় এক চেহারা!অধরার লম্বা কেশ যেন ঝর্ণার মতো ঝুমঝুম পানি পড়ার মতো বুকে পড়ছে নিলয়ের।আহা!কী সুখ!তোমাকে রেখে এক মুহূর্তও থাকা জীবন ব্যর্থ অধরা!
নিলয়ের চোখের দৃষ্টি যেন অধরার দেহে নয় মনের গহীনে বিচরণ করছে।নিলয় বড্ড বেশি ভালোবাসছে আজকাল।কথায় কথায় বায়না ধরা,কাছে পাওয়ার আকুতি অধরার মনকেও নাড়া দেয়।
নিলয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্র।আর কয়েকমাস বাদে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে লেখাপড়ার পাঠ চুকাবে।অধরার চলছে অনার্স ফাইনাল!নিলয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ার পর নিলয়ই অধরার শিক্ষক,বন্ধু। একই ডিপার্টমেন্ট বলে প্রায়ই দেখা সাক্ষাত হয়।আজ একটু, কাল একটু কথা, আলাপের আয়নায় বন্ধুত্ব গাঢ় হয়েছে।মাঝে মাঝে বাসায় গিয়ে পড়াও বুঝিয়ে দিয়ে আসে।অধরার পরিবারও নিলয়কে পছন্দ করে।নিলয়ের মা বাবা দুইহজনই ডাক্তার।কিন্তু ছেলে সাধারণ চলায় অভ্যস্ত।তার সিম্পলিসিটি সকলের মন কাড়ে।

রাতে ডিনার শেষে নিলয় পড়ার টেবিলে বসে বেশ আগ্রহ নিয়ে খামটি খুলে।খামের ভিতর কী এটা?তাজ্জব বনে গেল নিলয়!অধরা কী করল এটা!এতগুলো টাকা কোথায় পেলো সে?নিলয় অধরার স্টাইফেনের টাকারও হকদার হয়ে এতো তাড়াতাড়ি?কেন দিল সে? নিলয় নিজেকে অপরাধী ভাবতে লাগল।বেকার বলেই কি সবাই তাকে দয়া করছে?অধরাও শেষমেশ তার নিলয়কে টাকা দিয়ে উপহাস করলো!রাতে ফোন দিয়ে অধরাকে বিরক্ত করে না নিলয়।আজ করতে ইচ্ছে হল।কেন সে তাকে টাকা দিয়ে অসম্মান করলো জানতেই হবে।
-হ্যালো,অধরা,কী করছো?নিলয়ের মুড অফ বুঝে অধরা হাসলো মনে মনে।
-না, কিছু করছি না এখন।খেয়েছি,ঘুমাতে যাব।এত রাতে ফোন দেবে জানতাম বলেই আগেভাগে খেয়ে সব কাজ শেষ করেছি।রাগ করলে নাকি!
-কী বলছো, রাগ  না করার মতো কী কাজ করেছো?আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম!আমার বাবা মায়ের মতো তুমিও!এ মেনে নেয়া যায় না।
-আমি জানি রাগ করো না।তোমাকে দিয়েছি সামান্য টাকা বাকীটা মাকে দিয়েছি।অামার ইচ্ছে হলো তোমাকে দিতে,তোমার কষ্ট আমার লেখাপড়ায় কম নয়।তুমিও এই টাকার হকদার নিলয়।এটা দেয়ার মানে বুঝেছো?ভবিষ্যতে এভাবে আমরা কাজ,ইনকাম সব একসাথে জমা করব।কেউ কারো কাছ থেকে লুকাবো না।এখন থেকেই শুরু করলাম সে কাজটি।অধরা দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করায় নিলয়ের মনে অজানা বিশুদ্ধ আনন্দ বন্যা বয়ে গেলো।
-টাকাটা আমি কী করব?কেন দিয়েছো?অধরাকে জিজ্ঞেস করে নিলয় কোন উত্তর পেলো না।দশ হাজার টাকা কম নয় একজন ছাত্রের জন্য।দেখা যাক এক সময় অধরাকেই আবার ফিরিয়ে দেবে যে কোন উছিলায় নিলয় এমন ভেবে টাকাটা যত্ম করে রেখে দিল।

হঠাৎ টুস করে খামের ভিতর থেকে কী যেন আরেকটি জিনিস পড়ল নীচে!একটি সুন্দর হাতের লেখা চিঠি!নিলয় এবার খুব উচ্ছ্বসিত!

খামের ভিতর খাম ভরা চিঠি আর গোলাপ পাপড়ির সুঘ্রাণে চিঠির প্রতিটি লাইনের প্রতিটি শব্দ গোলাপ পাপড়ি ঐশ্বরিক সুখের মাতম  মনে হচ্ছে নিলয়ের।বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ছে প্রিয়তমা অধরার চিঠি-প্রেমে পূর্ণ গোলাপ জ্যাোতি।

প্রিয়তম,
কেমন আছো জিজ্ঞেস করবনা,আমি জানি প্রতিদিনই তুমি ভাল থাকো, আমি পাশে থাকলে তোমার।আজীবন থাকবো কথা দিলাম যদি সে সৌভাগ্য আমার হয়।আজ তোমাকে খামের ভিতর খাম দিলাম।হয়তো খেয়াল করবে না।টাকাগুলো দেখে তুমি মেজাজ খারাপ করবে আর সেই সুবাদে টাকার ভিতরে গুঁজে দেয়া ছোট খামটি নীচে গড়িয়েন পড়বে জানি।আমাকে রাগে ফোন দেবে।আবার পরাজয় মেনে নিয়ে শুতে যাবার আগে পায়ে লাগবে খামটি।তারপর মন দিয়ে পড়বে আমার তোমার মনের কথায় লেখা ছোট ছোট কথা মালা।
এই তোমার মনে আছে? প্রথম দিনের আমাদের দেখা সাক্ষাতের কথা!সেই ধানমন্ডি লেকে!হাঁটছি তো হাঁটছি কোন কথা নেই দুজনের মুখে।শুধু পায়ে পা দেখছিলাম।পাঁচ,দশ পনেরো আর বিশটি আঙ্গুলের অভিক্ষেপ বাগানের হাঁটাচলায় প্রাণবন্ত দৃশ্য। তোমার প্রথম কথা শুরুটা এমন ছিল,পরীক্ষায় ভাল করতে হলে প্রেমে সময় দিলে চলবে না।মন দিয়ে পড়তে হবে।সব সময় ঘুরাঘুরি চলবে না।তখন আমার মনে হয়েছিল তুমি কি প্রেমিক না আমার শিক্ষক পাশাপাশি হাঁটছি!মুখটা এমন গুরু গম্ভীর আমি ভয়ে কথা বলার সাহস হারিয়েছি।পরে তুমি নিজেই সহজ করেছো আমাকে।কাছে টেনে নিয়ে ভাল বন্ধু হওয়ার মন্ত্রে দীক্ষিত করেছো।সবাই যদি তোমার মতো ভাল মনের প্রেমিক হতো আজ দেশে ধর্ষণ,অপহরণ আর বিয়ের প্রলোভন,প্রেমের প্রতারণার ফাঁদে ফেলার মতো দূর্ঘটনায় হাজারো নারীর ইজ্জত,সম্মান নষ্ট হতো না।তোমাকে স্যালুট জানাই।বন্ধুত্ব, প্রেম স্বর্গের ছোঁয়া দেয়।মানুষকে ভাল থাকা আর রাখার অনুপ্রেরণা দেয়।তোমার মতো বিশ্বের সব প্রেমিক উদার হোক, ভাল হোক এই কামনা করি।
ইতি
তোমার ভালোবাসা
"অধরা"

নিলয় কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে অধরাকে দেখলো।কত সুন্দর সুশ্রী মায়াবতী এই মেয়েটা তার জীবনের রঙের ফানুস।ইচ্ছে করলেই এমন স্বর্গীয় দান পাওয়া যায় না।অনেক সাধনা করতে হয়।আর আমি এমন সৌভাগ্যবান হবু স্ত্রীকে মাঝে মাঝেই অযাচিত কথা বলে কষ্ট দিয়ে ফেলি।অধরা বাস্তববাদী,আবেগী নয়।

আজ ভার্সিটির করিডোরে সবাই বেশ জমজমাট আলোচনা আড্ডায় ব্যস্ত।কেউ যেন অধরা আর নিলয়ের নাম ধরে কী যেন বলছে।কথাগুলো ভেসে আসছে ইথারে ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টেও।অধরা তার ক্লাসে।নিলয় সবে এসে নিজের রোল খুঁজছে।পরীক্ষার রেজাল্ট আউট হলো আজ।অধরারও।তবে কারো সাথে কারো দেখা নেই আজ কয়েক সপ্তাহ।নিলয় ভেবেই নিয়েছে বিয়ের দিনই অধরাকে দেখবে। তার আগে নয়।কিন্তু হঠাৎ দেখা হয়ে গেল।ইদানীং নিলয় ভার্সিটিতে আসে না।ছাত্রজীবন শেষ যে!
-কেমন আছো?অধরা অপ্রস্তুত ভাবে হাঁটছে।দুইজনের গন্তব্য এক দিকে।অফিসের নোটিশ বোর্ড। শিক্ষার্থীদের খুব ভীড় এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে রাস্তা থেকে স্পষ্ট।
-অধরা ধরা গলায় বলছে,ভাল আছি।তুমি কেমন আছো?দেখা  না হওয়ায় ভাল ছিল।
-হুম,আমিও ভাবছি।কেন যে এলাম আজ ভার্সিটি।তোমাকে দেখবো আশা করিনি।নিলয় একাই চলে যাচ্ছিল অধরা থামিয়ে দিয়ে হাত ধরে বাদাম বৃক্ষ চত্বরে গিয়ে বসল দুজন পাশাপাশি।
কী মনে করেছো?বিয়ের দিন দেখবে আমায়?না, তা হবে না।প্রতিদিন দেখতে হবে।বিরক্ত করে ফেলবো একেবারে।এক মাস কষ্ট দিয়েছি,বিরহ কী জিনিস বুঝার জন্য।
-নিলয়ের চোখের কোণে জল।অধরা দেখছে তার ভালোবাসা কতটা নিলয়কে স্পর্শ করেছে।

-কাঁদছো কেন?আমি কোথাও চলে গেছি নাকি!
পড়ালেখার বিষয়ে তুমি আমি সিরিয়াস তা সবাই জানে।দেখাদেখি করলে পড়ার ক্ষতি হতো।এখন দেখবে রেজাল্ট কত ভাল হয়েছে।একথা বলতে বলতে অধরার মোষ্ট ফেভারিট ফ্রেন্ড টুম্পা দৌঁড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বাদাম তলায় বসে।নিলয় ব্যাগ থেকে বিশুদ্ধ পানির বোতল দিয়ে টুম্পাকে গলা ভিজাতে বলে।
দোস্ত কী হয়েছে?এমন পাগলের মতো দৌঁড়ঝাপের কী হল?অধরা বেশ বিরক্তই হলো টুম্পার কষ্ট করে আসা দেখে।
-কী বলছিস!পারলে হামাগুড়ি দিয়ে আসি।টুম্পার কথায় আশার ডাল-পালা দেখছে অধরা নিলয়।
-তোরা দুইজনই ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট! উপাচার্য স্যার তোদের দুইজনকে খুঁজছেন। টুম্পা পানি খানিকটা মুখেও ছিটিয়ে দিল।
- কী বলছো!দুইজনেই উঠে দাঁড়াল।এতোটা ভাল রেজাল্ট আশা করিনি!নিলয় অধরা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে বিমুগ্ধ নয়নে চেয়ে থাকে।
-টুম্পা চিমটি কাটে অধরাকে।এই কোথায় হারালি! যাক এবার তোদের বিয়ে টাও ভালোবাসা দিবসে সেরে নিতে হবে।দুই পরিবারের মহা খুশির দিন হবে আশা করি।
- টুম্পার কথায় অধরা কিছুটা লজ্জায় মাথা নিচু করে রইল।নিলয় অধরার হাত ধরে ভরসা দিলো আজীবন পাশে থাকার।সত্যি, ভালোবাসার গল্পটা  এমনি হওয়া উচিত সকলের জীবনে।সত্যিকার ভালোবাসা হারিয়ে নয় বরং জিতিয়ে দেয় জীবনের সবক্ষেত্রেই। অস্তিত্ব থাকে চির ভাস্বর। অধরা আর নিলয় নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাবে হাজারো প্রেমিক প্রেমিকার উৎসাহ,অনুপ্রেরণা হয়ে।

ভালোবাসা দিবস আজ!১৪ই ফেব্রুয়ারিতেই বিয়েটা সেরে নিল অধরা নিলয়।পরিবারের সবাই মহা খুশি।সবার মনে মেধাবী দুই মুখ ভাসছে আনন্দে।ভালোবাসা দিবস স্মরণীয় হয়ে রইল দুইজনে জীবনে।গত বছর এই দিনে দুইজনের পরিচয়,প্রেমের সূচনা আর আজ একই দিনে প্রণয়ের শুভ পয়গাম।ভালোবাসা যেন ভিজে গেছে শরীরে আর মনে একাকার হয়ে বৃষ্টিধারা হয়ে।

-----------------------------

পারভীন আকতার
শিক্ষক,কবি,গল্পকার ও প্রাবন্ধিক
চট্টগ্রাম।