কাঙ্গালের কারাবাস

কাঙ্গালের কারাবাস

 আনিসুল হক লিখন

সময়ের তরে আমি এক বাঙ্গালি,বাংলাদেশি

আমাকে জানতে হয় ভাটিয়ালি পল্লীর গীত

আমাকে বাইতে হয় তরী

জল কিংবা স্থল বলে কিছু নেই

 প্রয়োজনে আমাকেই বপন করতে হয় বীজ সবুজের চারা সোনালি ধানের শিষে 

আমাকে জাগতে হয়;

আমাকে জাগাতে হয়

নাক ডাকা আখ্যান উপাখ্যান গল্পের মহা সমগ্র।

আমি এক বাঙ্গালি। আমি বাংলাদেশি।

প্রয়োজনের তরে আমাকে ডাকা হয়

আমি ডাক শুনে ভুলে যাই আমার ইতিহাসের কালো অধ্যায় নীল যৌবন। 

কখনো উর্বরা ধানের গন্ধে ফিরে পাই ছেলে বেলার উচ্ছ্বাস আর কখনো হাওরী ঢলে নতুবা তিস্তার গ্রাসী দুঃখে বাড়ে

পেটের অনন্ত ক্ষুধা।

তবুও আমি ভেসে যাই বিদগ্ধ জলে,ছায়ায়,মায়ায়,কলার ভেড়ায়।

লাশের মতো ভাসতে থাকি মহাজনের খপ্পরে 

ছেঁড়া জামা জুতোই প্রহর গুনতে থাকি আজন্মকাল 

একটি সকালের অন্বেষায় বাঁচতে থাকি খড়কুটো নলখাগড়ার পদ্যে 

ভালোবাসার কংক্রীটে আবেগের গলুইয়ে বুকে হাত রেখে বলি ও আমার যুদ্ধ জীবন মরে গেলে প্রেম দিও বেঁচে থাকতে ছলনা। 

বন্যার জল আর দ্রব্যমূল্যের পীরিতি কোনটাই কমতি নেই

তারপরও সোহাগের চুমো খাই প্রেয়সীর গালে 

আমি বাঙ্গালি আমি বাংলাদেশী

এ আমার সায়রে ভাষা বিষণ্ণ তরীর যেন একলা মাঝির 

কাঙ্গালের কারাবাস।।